সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচের মধ্যে যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে, তা নিয়ে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে মহানগরী, শহর, মফঃস্বলের মতো জায়গায় কোন চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ হবে, কীভাবে চিকিৎসা করতে হবে, তা নির্ধারণের জন্য যে নিয়ম আছে, সেটা ১৪ বছরেও কেন কার্যকর করতে পারল না, তা নিয়েও শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট একেবারে কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে যে পরবর্তী শুনানির দিনে যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সমাধানসূত্র বের করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পুরো দেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য স্কিমে (সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেলথ স্কিম বা সিজিএইচএস) নির্ধারিত হারেই চিকিৎসার খরচের নিয়ম কার্যকর করে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে শীর্ষ আদালত। সেজন্য এক মাসের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
যদিও নিজের স্বপক্ষে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে যে ওই নিয়ম কার্যকর করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে বারবার চিঠি লেখা হয়েছে। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি রাজ্য সরকারগুলি। যদিও কেন্দ্রের সেই সাফাইয়ে একেবারে সন্তুষ্ট হয়নি শীর্ষ আদালত। বরং একেবারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার অধিকার আছে নাগরিকদের। তা নিয়ে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না কেন্দ্রীয় সরকার।
সেইসঙ্গে এক মাসের মধ্যে যাতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ নির্ধারণের বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হয়, সেটার জন্য রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবকে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর সেই কাজটা যদি না করা হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট নিজেই পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট বলেছে, ‘যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সমাধানসূত্র বের করতে না পারে, তাহলে পরের শুনানিতে আমরা মামলাকারীর আর্জি বিবেচনা করে দেখব যে দেশজুড়ে রোগীদের চিকিৎসার জন্য ‘সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেলথ স্কিম’-এ নির্ধারিত রেটই কার্যকর হবে কিনা।’
যে মামলার প্রেক্ষিতে সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, তা দায়ের করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে চিকিৎসার রেট নিয়ে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। যদি রাজ্য সরকার সহযোগিতা না করে, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার আইন প্রয়োগ করতে পারে বলেও সওয়াল করেছেন মামলাকারী সংগঠনের আইনজীবী।