ইউকেতে উগ্রপন্থার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন খোদ সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি কার্যত সতর্কবাণী দিয়েই বলেন, মানুষের প্রতিবাদ মিছিল করার অধিকার রয়েছে, আর তা শান্তিপূর্ণভাবে করার অধিকার রয়েছে, তবে তাতে হিংসা বা উগ্রপন্থার ডাক মোটেই কাম্য নয়। উল্লেখ্য, বহু দিন ধরেই উদ্বাস্তু সমস্যায় জর্জরিত রয়েছে ব্রিটেন সহ ইউরোপের নানান অংশ। তবে বহু ভাষা ও বহু এলাকার মানুষের যাতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ব্রিটেনে হয়, তার জন্য সুর চড়া করেছেন ঋষি।
ইউকের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সদ্য কয়েক মাস ও সপ্তাহ ধরে অপরাধমূলক ঘটনা, উগ্রপন্থার দাপাদাপি ‘ভয়াবহভাবে বাড়ছে’ সেদেশে। সুনাক বলছেন, রাস্তায় যা প্রতিবাদ হিসাবে শুরু হয়েছিল, তা পরে গিয়ে ‘হুমকি, ভয় দেখানো ও পরিকল্পিত হিংসায়’ রূপান্তরিত হয়েছে। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে জাতীর প্রতি দেওয়া বার্তায় ঋষি সুনাক বলেন, পরিচয় যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, তার জন্য ইহুদি শিশুরা তাদের স্কুল ইউনিফর্মের একটি বিশেষ অংশ লাগাতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘মুসলিম মহিলারা রাস্তায় হেনস্থার মুখে পড়ছেন সেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের দায়ে, যার সঙ্গে তাঁদের যোগই নেই কোনও। আর এখন আমাদের গণতন্ত্র টার্গেটের মুখে।’ একই সঙ্গে এই ধারালো বার্তার ভাষণ থেকে সুনাক স্বীকার করে নেন যে, ইউকে-তে বিভিন্ন দেশের মানুষ এসে বসবাস করছেন, তাঁদের পরিচয়কে না হারিয়ে। ব্রিটেনের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলছেন, ‘আপনি একইসঙ্গে হিন্দু ও গর্বিত ব্রিটিশ নাগরিক হতে পারেন আমার মতো, কিম্বা মুসলিম ও দেশাত্মবোধক নাগরিক হতে পারেন আরও অনেকের মতো, কিম্বা একজন নিবেদিত প্রাণ ইহুদি ও স্থানীয়দের মতো হৃদয় পাওয়া মানুষ হতে পারেন… ’ আর এঁরা সকলেই একটা সহিষ্ণু বাতাবরণে একসঙ্গে ক্রিস্টান চার্চকে সঙ্গে নিয়ে থাকতে পারেন, বলে বক্তব্য রেখেছেন সুনাক। তিনি বলছেন, আমার আশঙ্কা, বিশ্বের সবচেয়ে সাফল্য মণ্ডিত বহু জাতিক ও বহু ধর্মীয় এই গণতন্ত্রকে জেনে বুধে নিশানা করা হচ্ছে।
সুর চড়া করে ঋষি সুনাক বলেন, ‘ইসলামের উগ্রপন্থী ও কট্টর দক্ষিণপন্থীরা বিষ ছড়াচ্ছে উগ্রপন্থার।’ প্রতিবাদ সভা নিয়ে সুনাক বলছেন, ‘ হ্যাঁ.. আপনারা মিছিল করতে পারেন, প্রতিবাদ করতে পারেন আপনাদের প্যাশনকে নিয়ে। আপনারা আপনাদের নাগরিক জীবনের জন্য প্রতিরক্ষার দাবিও করতে পারেন। তবে না.. আপনারা হিংসাত্মক জেহাদের ডাক দিতে পারেন না।’ ঋষি সুনাক, এই ইস্যুতে সাফ বলছেন, যেভাবে প্রতিবাদগুলিকে সেদেশের পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করছে, তাতে তিনি পুলিশের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।