চন্দা কোছর ও তাঁর স্বামী দীপকের গ্রেফতারির মামলায় বম্বে হাইকোর্টে তুমুল ভর্ৎসিত হল সিবিআই। বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি অনুজা প্রভুদেশাই এবং বিচারপতি এন আর বোরকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ঋণ জালিয়াতির মামলায় আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সিইও চন্দা কোছর এবং তাঁর স্বামী দীপককে যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই গ্রেফতার করেছিল, তাতে ছিটেফোঁটা মাথা খাটানো হয়নি এবং আইনের প্রতি উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা হয়নি। যা ক্ষমতার অপব্যবহারের সামিল। উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রভুদেশাই এবং বিচারপতি বোরকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল যে কোছারদের গ্রেফতারির বিষয়টা পুরোপুরি অবৈধ এবং বেআইনি। সেইসঙ্গে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে যে অন্তর্বর্তীকালীন রায় দিয়েছিল অপর একটি বেঞ্চ, সেটাই বজায় রাখা হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত রায়ের কপি অনুযায়ী, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে কোন পরিস্থিতিতে চন্দাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেটা ঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনি সিবিআই। তাঁদের গ্রেফতারির স্বপক্ষে উপযুক্ত নথিও পেশ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই পরিস্থিতিতে এটাই প্রমাণিত হয় যে ঋণ জালিয়াতির মামলায় আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সিইও চন্দা ও তাঁর স্বামীর গ্রেফতারির বিষয়টি বেআইনি ছিল।
সেইসঙ্গে চন্দাদের গ্রেফতারির স্বপক্ষে সিবিআই যে যুক্তি দিয়েছে, সেটাও মেনে নেয়নি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রভুদেশাই এবং বিচারপতি বোরকারের ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই দাবি করেছিল যে তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে না চন্দা এবং তাঁর স্বামী। সেই যুক্তির প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেছে, 'ভারতীয় সংবিধানের ২০ (৩) ধারায় নীরব থাকার অধিকারের বিষয়টি আছে। যা আত্ম-অপরাধের বিরুদ্ধে অধিকার প্রদান করে থাকে। এটা বলা যায় যে অসহযোগিতার সঙ্গে নীরব থাকার অধিকারকে মিশিয়ে দেওয়া যায় না।'
আরও পড়ুন: Chanda Kochhar: ৫ কোটির ফ্ল্যাট ১১ লাখ টাকায় পেয়েছিলেন ICICI ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও,দাবি করল CBI
উল্লেখ্য, ভিডিয়োকন-আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ঋণ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সিইও চন্দা ও তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছিল, ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ আইন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্দেশিকা এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নিয়মভঙ্গ করে ভিডিয়োকন গ্রুপের কোম্পানিকে ৩,২৫০ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়েছিল। সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ তাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। তাঁর গ্রেফতারির ঘটনাকে বেআইনি হিসেবে ঘোষণা করার আর্জি জানিয়েছিলেন কোছর। তারপর ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি তাঁদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছিল হাইকোর্ট।