মানুষের থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে পশুর দেহেও। হংকংয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কিছু দিন আগে হংকং শহরে দুটি কুকুরের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, মালিকদের থেকেই তাদের দেহে সংক্রমণ ঘটেছে।
নেটার পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কুকুরগুলির নমুনার ভাইরাল জেনেটিক সিকুয়েন্স বিচার করে জানা গিয়েছে, সংক্রমিত মালিকদের নমুনায় থাকা জীবাণুর সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে।
যদিও গবেষণায় মানুষের থেকে পশুর দেহে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি, তবু গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, করোনা সংক্রমিতদের পোষ্যদের বিচ্ছিন্ন রেখে পরীক্ষা করা হোক। হংকংয়ে বর্তমানে সেই নীতিই মেনে চলা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিবন্ধে লেখা হয়েছে, হংকংয়ে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে ১৫টি কুকুরের নমুনা সংগ্রহের পরে পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে একটি আড়াই বছর বয়েসি জার্মান শেপার্ড এবং একটি ১৭ বছর বয়েসি পোমেরানিয়ান কুকুরের নমুনা রিভার্স ট্র্যান্সক্রিপশন পলিমেলেজ চেন রিঅ্যাকশন কিটের সাহায্যে পরীক্ষার পরে করোনা সংক্রমণের হদিশ মেলে এবং ওই দুটি কুকুরকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, Sars-CoV-2 বা করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের জন্য যেমন এনজাইমের সাহায্য নেয়, তেমনই কুকুরের শরীরে প্রবেশের জন্য এই ভাইরাস ACE-2 এনজাইমের সাহায্য নেয়, যার সঙ্গে মানুষের দেহে থাকা এনজাইমের মিল রয়েছে। ACE-2 এবং Sars-CoV-2-এর স্পাইক রিসেপ্টরের মধ্যে আদানপ্রদানে যুক্ত ১৮টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের মধ্যে ৫টি মানুষ ও কুকুরের মধ্যে আলাদা গোত্রের। এই তথ্য জানিয়েছে হংকংয়ের কৃষি মৎস্য ও সংরক্ষণ দফতরের গবেষণাপত্র।
এই গবেষণার প্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণী বিক্রির বাজারে সংক্রমিত পশু থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। উলব্লেখ্য, চিনের উহান শহরের এমন বাজার থেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রথম দেখা দিয়েছিল।