বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি অ্যালোপ্যাথি ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে। অথচ করোনাভাইরাস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ওষুধ ব্যবহার করল ভোপালের একটি সরকারি হাসপাতাল। যা নিয়ে চিকিৎসক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সোমবার ভোপালের সরকারি হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের তরফে দাবি করা হয়, হাসপাতালে ভরতি কমপক্ষে ছ'জন করোনা আক্রান্ত সেরে উঠেছেন। জেলা প্রশাসনের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'গত ১৪ মে ভরতি হওয়া ছ'জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু। যাদের অভিভাবকদের রিপোর্টও পজিটিভ এসেছিল। বাচ্চাদের হোমিওপ্যাথি ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাদের কোনও অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দেওয়া হয়নি।'
বিবৃতিতে চিকিৎসর মনোজ কুমার সাহুকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, 'ওই রোগীদের বিস্তারিত ইতিহাস জানার পর হোমিওপ্যাথি ওষুধ নির্বাচন করা হয়েছে এবং ডোজ নির্ধারণ করা হয়েছে। আশ্চর্যজনক ফলাফল। হোমিওপ্যাথি ওষুধের পর রোগীদের দ্রুত উন্নতি হয়েছে এবং কোনও রোগীর (বাইরে থেকে) অক্সিজেন সহায়তা লাগেনি।' আপাতত হাসপাতালটিতে ৪৭ জন করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে।
তবে চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অমূল্য নিধি বলেন, 'হুয়ের চিকিৎসা প্রোটোকলে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি অ্যালোপ্যাথি ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। রোগী ও অন্যান্য প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শুধুমাত্র আয়ুর্বেদ পন্থার কথা আয়ুষ বিভাগের অ্যাডাইজারিতে বলা হয়েছে। কোনও বিকল্প ওষুধের মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এখনও পর্যন্ত অনুমতি দেয়নি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। '
এই ধরনের অনুমোদনহীন চিকিৎসা পদ্ধতির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়ে নিধি বলেন, 'এই ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা ও হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে সফল চিকিৎসার দাবি শুধুমাত্র সেইসব রোগীদের জন্য বিপজ্জনক নয়, যাঁদের চিকিৎসা করা হচ্ছে, রাজ্য এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অন্যদের (করোনা উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি) ক্ষেত্রেও তা ঝুঁকিপূর্ণ। কারোর করোনার উপসর্গ থাকলে অ্যালোপাথি হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করানোর জন্য বারবার আবেদন জানাচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য। হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে এই ধরনের সফল চিকিৎসার দাবির ফলে করোনা উপসর্গ থাকা একটি অংশের মানুষ সরকারি হাসপাতাল বা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকদের পরবর্তীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উপর নির্ভর করবেন।'
যদিও সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের গবেষণা বিভাগের এস এন শুক্লার দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যাবতীয় নির্দেশিকা মেনেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। তা বিজ্ঞানসম্মত তো বটেই। ফলও মিলছে। তিনি বলেন, 'আমরা আপনাদের বলতে পারব যে কী ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এবং কী দেওয়া হচ্ছে না। ১০ দিনেরও আগে রাজ্য সরকার আমাদের হাসপাতালকে করোনা কেয়ার সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। '