বিশ্বজুড়ে কোভিড প্রতিষেধক আবিষ্কারের দৌড়ে উজ্জ্বল অবদান রাখলেন ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক দীপক পালিওয়াল। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনা টিকা নিজের দেহে পরীক্ষা করতে দেওয়ার অনুমতি দিতে দু’ বার ভাবেননি তিনি।
বিবিসি-কে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে কী ভাবে অংশগ্রহণ করা যায়, তাই নিয়ে বেশ কিছু দিন চিন্তা করেন দীপক। অবশেষে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের তৈরি ভ্যাক্সিন মানবদেহে পরীক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলে তিনি নিজের লক্ষ্যপূরণের সুযোগ পেয়ে যান।
গত ১৬ এপ্রিল এই সম্পর্কে খবর পেয়ে তিনি ২৬ এপ্রিল প্রথামিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য লন্ডনের পাঁচটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের একটিতে স্ক্রিনিংয়ের সম্মুখীন হন। শুধুমাত্র স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান দীপক। কিন্তু প্রথমেই বেঁকে বসেন তাঁর স্ত্রী।
এই কাজে মারাত্মক বিপদের ঝুঁকি আছে জেনেও বন্ধুদের সমর্থন পেয়ে এগিয়ে যান দীপক। টিকা প্রয়োগের আগে গবেষকরা সবিস্তারে তাঁকে জানান, বিবিধ ঝুঁকির কথা। দীপক জানতে পারেন, পরীক্ষায় তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকি এক স্বেচ্ছাসেবী পরীক্ষার মাঝেই মারা গিয়েছেন বলেও তিনি জানতে পারেন। কিন্তু তবুও সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন দীপক।
বছর বিয়াল্লিশের দীপক পালিওয়াল আদতে রাজস্থানের জয়পুর শহরের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি সস্ত্রীক লন্ডনবাসী। পরীক্ষা সফল ভাবে সম্পূর্ণ হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে তাঁর পরিবার। যদিও গর্বিত স্ত্রী জানিয়েছেন, আর কখনও এমন দুঃসাহসিক কোনও অভিযানে স্বামীকে যোগ দিতে দেবেন না।
ইতিমধ্যে আরও কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে নতুন ভ্যাক্সিনের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। অতিমারীর প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে দীপকের মতোই বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন অগুনতি স্বেচ্ছাসেবী। তাঁদের অবদানের জেরেই একদিন করোণামুক্ত হবে বিশ্ব, এমনই স্বপ্ন দেখছেন কোটি কোটি মানুষ।