জোটে থাকব কিন্তু সমন্বয় কমিটিতে থাকব না। এমনই নীতি নিয়েছিল সিপিএম। আর সে কথা শোনা গিয়েছিল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মুখে। কিন্তু তাতে যে আখেরে তাদের নিজেদের ক্ষতি হবে সেটা দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছেন শীর্ষ নেতারা। আর লাভ হবে বিজেপির সেটা উপলব্ধি করেছেন তাঁরা। তাই বিকল্প পথ হিসাবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে সমন্বয় রেখে চলতে শুরু করল সিপিএম। বিজেপি বিরোধী জোটের মধ্যে থাকা বাছাই করা দলগুলির শীর্ষ নেতাদের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সেখানে গিয়ে আলোচনা করছেন নানা বিষয়ের উপর।
ইতিমধ্যেই এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের নয়াদিল্লির বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ইয়েচুরি। কিন্তু আগের দিন ওই বাড়িতেই ছিল ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির বৈঠক। যেখানে তিনি ছিলেন। এই ধরি মাছ না ছুঁই পানি নীতি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। তাই বিষয়টি সর্বভারতীয় স্তরে খারাপ হতে পারে ভাবমূর্তি বলে বুঝতে পেরেছেন ইয়েচুরি। বিজেপিকে হটাতে গেলে ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। আর তাই এই বিকল্প পথ ধরে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সিপিএমের এই শীর্ষ নেতা। তবে সেখানে গিয়ে কোন আলোচনা করছেন সেটা তিনি খোলসা করেননি।
এদিকে গত বুধবার রাতে পাটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করেন সীতারাম ইয়েচুরি। ইন্ডিয়া জোটকে শক্তিশালী করার পক্ষে সওয়াল করেন এই বাম নেতা। এই নীতীশ কুমারের বাড়িতেই বিরোধী দলগুলির প্রথম বৈঠক বসেছিল। যদিও তখন ‘ইন্ডিয়া’ নামকরণ গড়ে ওঠেনি। আর বৃহস্পতিবার ইয়েচুরি যান আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের বাড়িতে। লালু ছাড়াও ইয়েচুরির কথা হয় লালুপুত্র তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গেও। সেখানেও তিনি দলের লাইন জানিয়ে দেন। তবে বিজেপিকে হটাতে ঐক্যবদ্ধ থাকার পক্ষেই মত দেন তিনি। আর এই বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিতে চান।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষের জবাব দিলেন রাজ্যপাল, বিদেশ সফরের আগে সূক্ষ্ণ চাল
সীতারাম ইয়েচুরির এই বাড়ি বাড়ি যাওয়াকে জোটের স্বার্থে একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলেই মনে করছে সিপিএম। কিন্তু সমন্বয় কমিটিতে থাকা যাচ্ছে না দলের গাইডলাইন অনুযায়ী। ‘ইন্ডিয়া’র বাকি দলগুলি যাতে সিপিএমকে ভুল না বোঝে তাই এই বাড়ি যাওয়া বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলা ও কেরলের প্রেক্ষাপটে সমন্বয় কমিটিতে সিপিএমের পক্ষে থাকা সম্ভব ছিল না—এটাই এখন বলা হচ্ছে। আর আলিমু্দ্দিন স্ট্রিট চায়নি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও কমিটি ভাগ করুক দলের কোনও নেতা। উলটো দিকে কেরল রাজ্য কমিটিও চায়নি কংগ্রেসের সঙ্গে বাড়তি মাখামাখি। তাই এই পথ দরতে হয়েছে সীতারম ইয়েচুরিকে।