শনিবার রাজ্যপালের উদ্দেশে কড়া বাক্যবাণ ছুঁড়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নানা কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রবিবার ‘জুনিয়র অ্যাপয়েন্টি’র সেই কটাক্ষের জবাব দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তবে খুব নরমে। আজ, রবিবার সাংবাদিকদের কাছ থেকে সেই কটাক্ষের কথা শোনেন রাজ্যপাল। কল্যাণীতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই বিষয়ে সাংবাদিকরা তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি হাসি মুখে হালকা মন্তব্য করেছেন। উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জেরে রাজ্য বনাম রাজভবন শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাতেই রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী? এদিকে রাজ্যপাল পদটা সাদা হাতি পোষার সমান বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। আর তাতেই সংঘাতের বাতাবরণ নতুন করে তৈরি হয়েছে। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাজভবনে কবি বসে আছেন। এই কবি কামার বা কুমোরের নয়, এই কবি রাজার। দুটো দর্শনের লড়াই চলছে। একদল কুক্ষিগত করতে চাইছে। একদল বলতে চায়, আমি চালভাজা, আমিই মুড়ি। একটা সাদা হাতির মতো পদ রাখার কী যৌক্তিকতা আছে?’ এই প্রশ্ন তুলে সরাসরি রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী। আর একদিনের মধ্যেই তার জবাব দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
আর রাজ্যপাল কী বললেন? আজ, রবিবার কল্যাণীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই অনুষ্ঠান শেষে রাজ্যপালকে সাংবাদিকরা এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য তাঁর সামনে তুলে ধরা হয়। আর তখনই মুচকি হেসে রাজ্যপালের জবাব, ‘সংবিধান অনুযায়ী, উনি আমার সহকর্মী। এসব কথার উত্তর দেব না।’ প্রকাশ্যে এই কথা বললেও শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নালিশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। তাই আর কিছু বলতে চাইলেন না। আবার সোমবার আমেরিকা যাচ্ছেন রাজ্যপাল। তাই বিদেশ সফরের আগে সংঘাতে জড়াতে চাইলেন না তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেআইনি নির্মাণের খবর কেন মিলছে না? মেয়র চালু করলেন নয়া ফোন নম্বর
আগেও রাজ্যপালের সঙ্গে দ্বন্দ্বে নানা মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যপালের উদ্দেশে মহম্মদ বিন তুঘলক, ফাঁসুড়ের মতো শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। পরিবর্তে হুঁশিয়ারির সুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেছিলেন,‘যা করেছি, তাতে গর্বিত আমি। মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কী হবে দেখতে পাবেন।’ তখন পাল্টা টুইট করে ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, কী ঘটে দেখুন। সাবধান, সাবধান, সাবধান। শহরে নতুন ভ্যাম্পায়ার উপস্থিত হয়েছেন। সাবধান হয়ে যান শহরবাসী। রাক্ষস প্রহরে’র জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি, যার উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনিতে।’ তারপরই জোড়া চিঠি গিয়েছিলেন নবান্নে এবং কেন্দ্রে।