সামরিক শক্তি আরও বাড়াতে ৮৪,৫৬০ কোটি টাকার প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিল 'ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল' (ডিএসি)। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, নয়া প্রজন্মের অত্যাধুনিক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন, এয়ার ডিফেন্স ট্যাকটিকাল কন্ট্রোল র্যাডার, হেভিওয়েট টর্পেডো, মাঝারি-দূরত্বের সামুদ্রিক বিমান (যা ব্যবহার করবে ভারতীয় নৌবাহিনী ও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী), মাঝ-আকাশে বিমানে জ্বালানি ভরতে সক্ষম এয়ারক্র্যাফট এবং সফটওয়্যার-নির্ভর রেডিয়ো কেনা হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের 'ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল' অনুমোদন দেওয়ায় সেই প্রস্তাব যাবে ক্যাবিনেট কমিটির কাছে। সেখানে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়ে গেলেই ৮৪,৫৬০ কোটি টাকার সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
সূত্রের খবর, ওই ৮৪,৫৬০ কোটি টাকার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। 'আত্মনির্ভর ভারত'-র যে ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেটা পথে হেঁটেই ভারতীয় সংস্থার থেকে সামগ্রী কেনার উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আর সেই প্রস্তাবিত সামগ্রী যখন ভারতের হাতে আসবে, তখন ভারতের তিন বাহিনী (ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা ও ভারতীয় নৌবাহিনী) এবং ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
আর সেটার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে এয়ার ডিফেন্স ট্যাকটিকাল কন্ট্রোল র্যাডার। যা ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে মজবুত করে তুলবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, র্যাডারের মাধ্যমে যে কোনও ছোটখাটো, ঢিমেগতির এবং নীচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বস্তুকে চিহ্নিত করা যাবে। কোনও জিনিস র্যাডারের এড়িয়ে যাবে না। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, একদিকে পাকিস্তান এবং অন্যদিকে চিনকে নিয়ে যখন চলতে হচ্ছে, তখন এরকম এয়ার ডিফেন্স ট্যাকটিকাল কন্ট্রোল র্যাডার রাখলে অনেক নিশ্চিত থাকা যাবে।
আবার জলের তোলায় নিখুঁতভাবে 'টার্গেট'-কে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য হেভিওয়েট টর্পেডো কেনা হচ্ছে। নৌবাহিনীকে মাথায় যে যে সামগ্রী কেনা হচ্ছে, তাতে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে থাকা রণতরী, সাবমেরিনের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। আরও ভালোভাবে যেমন শত্রুকে চিহ্নিত করতে পারবে, তেমনই দরকারের সময় তুমুল আক্রমণাত্মক হয়ে শত্রুপক্ষকে শেষ করে দিতে পারবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে।
সেইসঙ্গে ১৫টি বিমানও কেনা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ন'টি বিমান কেনার প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়েছে 'ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল'। যা নজরদারি এবং টহল দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে। সেইসঙ্গে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর জন্য আরও ছ'টি বিমান কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে সেই ১৫টি বিমান তৈরি করা হবে। সেজন্য প্রায় ২৯,০০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।