মাটি খুঁড়ে মিলেছিল গোলাকার পাথর। সেগুলিকে ‘কূল দেবতা’ ভেবে বছরের পর বছর পুজো করে আসছিলেন স্থানীয়রা। শেষে জানা গেল আসলে তা কোনও সাধারণ পাথর নয়, তা হল ডাইনোসরের ডিম। কোটি কোটি বছর পর ওই জীবাশ্ম আকারেই উদ্ধার হয়েছে সেই ডিম। এমনই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ্যে এসেছে মধ্যপ্রদেশ থেকে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। মধ্যপ্রদেশের ধর জেলার পাদালিয়া গ্রামে ভেস্তা মান্দালোই নামে এক বাসিন্দা মাটি খোঁড়ার সময় ডাইনোসরের ডিমের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মাটি খুঁড়ে পাওয়া বস্তুটিকে ‘কাকার ভৈরব’ বলে বিশ্বাস করেই তারা এই পুজো করতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: উল্কাপাত নয়, অন্য এক ঘটনাই মুছে ফেলে ডাইনোসরদের! তারই খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা
ভেস্তার বিশ্বাস ছিল, যে কুলদেবতা তার কৃষিজমি এবং পশুদের রক্ষা করবেন। এই অঞ্চলের আখড়া, জামান্যাপুরা এবং টাকারির বাসিন্দারাও একই ধরনের বলের মতো বস্তুর পুজো করেন। ধর ও আশপাশের জেলায় মাটি খোঁড়ার সময় এসব বস্তু খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। এদিকে, এগুলি খুঁজে পাওয়ার পরেই তার ওপর নজর যায় বিশেষজ্ঞদের। ঘটনার খবর পেয়ে বীরবল সাহনি ইনস্টিটিউট অফ প্যালিওসায়েন্সেস (বিএসআইপি) লখনউয়ের বিশেষজ্ঞরা এবং মধ্যপ্রদেশের বন কর্মকর্তারা গ্রামে পৌঁছন। তারা গোলাকার ওই বস্তুর পরীক্ষা শুরু করেন। অবশেষে জানা যায়, সেগুলি হল ডাইনোসরের ডিম। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ডাইসানোরের যে ডিম সেখানে পাওয়া গিয়েছে তা হল আসলে টাইটানো-স্টর্ক প্রজাতির ডাইনোসরের ডিম। সংগঠনটির পরিচালক এম জি ঠকরের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি দল এলাকা পরিদর্শন করেছে। জানা গিয়েছে, এই জীবাশ্মগুলি সংরক্ষণের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ ইকো ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সিইও সমিতা রাজোরা, স্থানীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিশাল ভার্মা, জেলা বন কর্মকর্তা অশোক কুমার সোলাঙ্কি এবং অন্যান্যদের সহায়তায় একটি বিএসআইপি দল এলাকা পরিদর্শন করে। স্থানীয়দের জীবাশ্ম সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ইউনেস্কো থেকে ধর জেলাকে জিওপার্ক হিসেবে মর্যাদা যাতে পাওয়া যায় সেবিষয়ে আবেদন জানানো হবে। এম জি ঠকরে জানান, ‘আমরা সমস্ত জীবাশ্ম এবং ভূতাত্ত্বিক ঐতিহ্য রক্ষা করার চেষ্টা করি।’ জানা গিয়েছে, স্থানীয়রা উদ্ধার হওয়া ডাইনোসরের ডিমে মুখের মতো ছবি তৈরি করেছেন।