আঁখি দাসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল ছত্তিশগড় পুলিশ। যিনি ফেসবুকের ভারত, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার ‘পাবলিক পলিসি’-র অধিকর্তা। এছাড়া আরও দু'জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তারা হল, ছত্তিশগড়ের মুঙ্গেলির বাসিন্দা রাম সাহু এবং মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের বিবেক সিনহা।
রায়পুরের এক সাংবাদিক আওয়েশ তিওয়ারির অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে রায়পুরের কবীরনগর থানায় সেই এএফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আঁখি-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫ এ, ৫০৫ (১) (সি), ৫০৬ এবং ৫০০-র মতো ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যে আওয়াশের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আঁখি।
অভিযোগপত্রে আওয়েশ জানিয়েছেন, বিজেপির প্রতি ফেসবুকের ‘নরম অবস্থান’ নিয়ে ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল, তার ভিত্তিতে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। তারপর থেকেই ও বিবেক দু'জনের আঁখির সমর্থনে এগিয়ে আসে। প্রশ্ন করতে থাকে, আঁখি কেন সিপিআই(এম)-মাওবাদী, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ‘দেশদ্রোহী’-দের সমর্থন করবেন এবং মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতিশীল রাজনীতিতে আঁখি কেন জড়াবেন? দু'জনের বক্তব্য, আঁখি হিন্দু। তাই হিন্দুত্বের ভালো দিক নিয়ে কথা বলেছেন।
আওয়েশের অভিযোগ, সাম্প্রদায়িক ছবি পোস্ট করার পাশাপাশি তাঁকে উদ্দেশ করে কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকে রাম। দেওয়া হয় হুমকি। সেই সঙ্গে আঁখির বিরুদ্ধে পোস্টের জন্য হুমকি ফোন আসছে। বলা হচ্ছে, ওই সাংবাদিককে 'ধ্বংস করে দেওয়া হবে'। অভিযোগপত্রে আওয়েশ দাবি করেছেন, আঁখি, রাম ও বিবেক সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। সেজন্য তাঁর জীবন বিপদের মুখে আছে এবং তাঁকে সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে কাটাতে হচ্ছে।
এদিকে ফেসবুক বিতর্কে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শিবসেনা। দলের মুখপত্র 'সামনা'-য় অভিযোগ করা হয়েছে, গত সাত বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ভোটে জেতা এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনকে উল্লেখ করে শিবসেনার মুখপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে, একজন বিজেপি বিধায়ক এবং আরও তিনজন ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী (নেতা) এবং দল’-এর বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে চোখ বুজিয়ে রেখেছিল ফেসবুক, যাতে ভারতে সংস্থার ব্যবসা ধাক্কা না খায়। ফেসবুকের মতো সংস্থাকে ভারতীয় আইন মেনে চলতে হবে বলে 'সামনা'-য় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।