গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে ঢুকে আচমকাই হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকেই জবাবি হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেদেশে সর্বদল সরকার গঠিত হয়েছে। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে গাজার মাটিতে ইজরায়েলের সেনা নামানোর। এই সবের মাঝেই আন্তর্জাতিক মহলের নজর রয়েছে এই যুদ্ধের দিকে। আরব বিশ্বের দেশগুলি স্বভাবতই এই যুদ্ধকে সমর্থন করছে না। ইরানের মদতে লেবানন থেকে হেজবোল্লাহ ইজরায়েলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশ ইজরায়লেরকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। জো বাইডেন নিজে ইজরায়েলে গিয়েছিলেন। আর এবার ইজরায়েলে গিয়ে আন্তর্জাতিক জোট গড়ার প্রস্তাব দিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
এর আগে আইএস জঙ্গি সংগঠনের মোকাবিলা করার জন্য আন্তর্জাতিক জোট গড়া হয়েছিল। গতকাল জেরুসালেমে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন, আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াই করা আন্তর্জাতিক জোটের পরিসর বৃদ্ধি করা উচিত। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধেও লড়াই করা উচিত তাদের। উল্লেখ্য, এর আগে হামাসকে আইএস-এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। অপরদিকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চিরকালই সরব ম্যাক্রোঁ। এই আবহে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর তারপরই হামাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের লড়াই করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ।
এদিকে আন্তর্জাতিক জোট কীভাবে হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলকে সাহায্য করতে পারে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা দেননি ম্যাক্রোঁ। উল্লেখ্য, আইএস-এৎ বিরুদ্ধে যে আন্তর্জাতিক জোট লড়াই করছে, সেটির নেতৃত্বে আছে আমেরিকা। তবে ইজরায়েল আবার সেই জোটের অংশ নয়। এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতারা জানাচ্ছেন, হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যে আন্তর্জাতিক জোট গাজায় পা রাখবে, এমনটা নয়। ইজরায়েলকে সাহায্য করতে হয়ত আন্তর্জাতিক জোটের তরফে তথ্য আদান প্রদান করা হবে। এদিকে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, 'শয়তানের সঙ্গে মুক্ত বিশ্বের লড়াই এটা। এই যুদ্ধ শুধুমাত্র আমাদের নয়, এটা সবার লড়াই।'
এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, 'ইজরায়েল এবং ফ্রান্সের একটাই শত্রু - সন্ত্রাসবাদ।' এদিকে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ যাতে আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত না হয়, তার জন্যও সতর্ক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ম্যাক্রোঁর কথায়, 'হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কোনও দয়ামায়া দেখানো উচিত নয়। তবে এই যুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করাও উচিত হবে না।' প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই গাজার এক হাসপাতালে রকেট হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে ৫০০ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই হামলার দায় কার, তা নিয়ে ইজরায়েল ও ইসলামিক জিহাদের মধ্যে তর্ক জারি জারি রয়েছে। যদিও ইজরায়েল দাবি করেছে, ইসলামিক জিহাদের রকেটই সেই হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আমেরিকাও ইজরায়েলের থেকে এই সংক্রান্ত 'প্রমাণ' হাতে পেয়েছে।