উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন বিধায়ক তথা গ্যাংস্টার মুখতার আনসারির মৃত্যু হল জেলে। একদা উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো এই গ্যাংস্টার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। এদিকে মুখতার আনসারির ছেলে উমর আনসারি অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বাবাকে 'স্লো পয়জন' দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, বিগত বহুদিন ধরে মুখতারকে জেলে এমন বিষ দেওয়া হয়েছিল, যাতে ধীরে ধীরে তাঁর শরীরের অবনতি ঘটে এবং তিনি মারা যান। এই একই অভিযোগ করেন মুখতারের ভাই তথা গাজিপুরের সাংসদ আফজল আনসারি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার আচমকাই শরীর খারাপ হয়ে যায় মুখতার আনসারির। সেই সময় গাজিপুরের বান্দা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে সেখানেই রাতে মৃত্যু হয় মুখতার আনসারির। মৃত্যুকালে মুখতারের বয়স ছিল ৬১ বছর। মেডিক্যাল বুলেটিন অনুযায়ী, আনসারিকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ বান্দার হাসপাতালে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। তিনি বারবার বমি করছিলেন। পরে ৯ সদস্যের চিকিৎসকদের একটি দল তাঁর চিকিৎসা শুরু করে। তবে হৃদরোগে মৃত্যু হয় মুখতার আনসারির। এর আগে গত মঙ্গলবারও পেটের যন্ত্রণায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অপরাধ জগৎ থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করে বেশ সফল হয়েছিলেন মুখতার আনসারি। উত্তরপ্রদেশের মৌ সদর বিধানসভার পাঁচ বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলাল ছিল। মুখতার আনসারির বয়স যখন মাত্র ১৭ বছর ছিল, তখন তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পরে ২০২২ সালে প্রথমবার কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন আদালতে আটটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বান্দা জেলে বন্দি ছিলেন মুখতার। সম্প্রতি ৩৬ বছর পুরনো এক অপহরণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন মুখতার। সেই মামলায় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালে প্রথমবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল আনসারির বিরুদ্ধে। ১৯৮৬ সালে প্রথম খুনের মামলা দায়ের হয়েছিল মুখতার আনসারির নামে। তবে কয়েক দশকে মুখতারকে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ 'ছুঁতে পারেনি'। তবে ২০০৬ সালে প্রথমবার গ্রেফতার হন মুখতার আনসারি। এরপর থেকে আর জেল থেকে মুক্তি পাননি তিনি। তবে তাঁর তৈরি করে দেওয়া মাটিতে রাজনীতি করে বিধায়ক হয়েছে তাঁর ছেলে আব্বাস আনসারি। মৌ সদর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বর্তমানে আব্বাসই বিধায়ক।