লাদাখ ইস্যুতে সেনা পর্যায়ের আলোচনায় নয়া স্ট্র্যাটেজিতে চিন! জমি ছাড়ছে না ভারতও
2 মিনিটে পড়ুন Updated: 06 Jan 2022, 07:00 PM ISTলাদাখ প্রসঙ্গে আলোচনা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টায় বেজিং রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
লাদাখ প্রসঙ্গে আলোচনা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টায় বেজিং রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফের একবার চেনা স্ট্র্যাটেজিতে চিন। লাদাখ ইস্যুতে দুই দেশের সেনা পর্যায়ের আলোচনা ঘিরে দিল্লির প্রস্তাবে ফের একবার সায় না দিয়ে বেজিং নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এর আগে ২০২১ সালে শেষবার অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে দুই দেশ আলোচনায় বসে। সেই সময় ভারতের তরফে একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে সেসবের দিকে খুব একটা আমল দিচ্ছে না চিন। আর তার জেরেই এই ইস্যুতে পরবর্তী পর্যায়ে দুই দেশের সেনা স্তরীয় আলোচনা কবে হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
ভারতের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, অ্যাকচুয়াল লাইন অফ কন্ট্রোলের যে বাকি ফ্রিকশন পয়েন্ট রয়েছে সেগুলি নিয়ে একসঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে তাতে সায় দেয়নি চিন। উল্লেখ্য,আলোচনার লক্ষ্যবস্তু কী হবে, তা বারবার পাল্টে ফেলে আলোচনা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টায় বেজিং রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে, যখন এই ইস্যুতে দুই পক্ষের আলোচনা চলেছে তখন দিল্লির তরফে একাধিক প্রস্তাব ও আলোচনার লক্ষ্যবস্তু চিনের সামনে রাখা হয়। ভারতের প্রস্তাব ছিল, ডেপসাং থেকে শুরু করে চুমার পর্যন্ত যে ফ্রিকশন পয়েন্টগুলো রয়েছে, তা নিয়ে একযোগে সেনা পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনার প্রস্তাব রাখা হয়। যাতে লাদাখ সীমান্ত বরাবর সেনা প্রত্যাহার বা ডিসএনগেজমেন্ট সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট দিশা পাওয়া যায়। 'চিন এই বিষয়ে সহমত নয়। ভারত যে প্রস্তাবই রাখে, তার নিয়ে ভিন্ন সময়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন তাঁরা', বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। যদিও এর আগে , ভারতের সঙ্গে চিনও এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেছিল যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সীমান্তের ফ্রিকশন পয়েন্টে ডেসএনগেজমেন্ট নিয়ে একটি সমাধান সূত্রে আসতে হবে, তবুও বেজিং সেই মর্মে সেভাবে বাস্তবের মাটিতে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়নি।
উল্লেখ্য, শেষবার ভারত ও চিনের সেনা পর্যায়ের বৈঠকে লালফৌজের তরফে প্রতিনিধিত্ব করেন, ডেপুটি কর্পস কমান্ডার । তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনুমোদিত ছিলেন না। ফলে বৈঠক হলেও, তা সেভাবে ফলপ্রসূ হয়নি বিভিন্ন খাতে। এদিকে, এই বৈঠকের পর ভারতের তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়,তাতে লেখা ছিল, ' বাকি এলাকাগুলি নিয়ে ভারতের তরফে সমস্যা সমাধানে অনেক গঠনমূলক পরামর্শ দিলেও তাতে চিন সায় দেয়নি। এছাড়াও তারা কোনও এগিয়ে যাওয়ার মতো প্রস্তাবও দেয়নি।' চিনের স্ট্র্যাটেজি যে এভাবেই চলেছে গত কয়েক বছরে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে। সীমান্ত ঘেঁষে লালফৌজের রাস্তা, ব্রিজ, অত্যাধুনিক বিমানবন্দর তৈরি করার ঘটনা প্রমাণ করে যে লাদাখ ইস্যুকে সহজে ছেড়ে দিতে চাইছে না চিন।
প্রসঙ্গত, এই এলাকায় দুই দেশেরই কয়েক হাজার সেনা জওয়ান সীমান্তের এপার ওপারে রয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে লাদাখে যে সংঘাতের শুরু হয়েছে তাকে শেষ করার জন্যই ভারত-চিন দুই দেশের সেনা পর্যায়ের বৈঠকে সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে, চিন যে সেই সমাধানের রাস্তায় খুব একটা আগ্রহী নয়, তা তাদের এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ জানান দিচ্ছে। এমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এদিকে, চিন যে তলে তলে নিজের সীমান্তের পরিকাঠামো পোক্ত করছে তার প্রমাণ মিলেছে সদ্য উঠে আসা এক স্যাটেলাইট ছবিতে। সেখানে লাদাখের প্যানগং লেকের কাছাকাছি একটি ব্রিজ নির্মাণের ছবি উঠে আসে। যা চিনকে স্ট্র্যাটেজিত দিক থেকে সুবিধাজনক জায়গায় রাখবে বলে মনে করছেন অনেকেই। আর এই ঘটনা থেকেই মনে করা হচ্ছে যে চিন সহজে লাদাখ ইস্য ছাড়তে রাজি নয়।