বুলেট ট্রেন শিলান্যাসের পর থেকেই তা ঘিরে নানান গুঞ্জন চলেছে আমজনতার মধ্যে। এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, একেবারে প্রমাণ নিয়েই হাজির রেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও অত্যাধুনিক প্রকল্প, মুম্বই-আহমেদাবাদ হাইস্পিড রেল করিডর নির্মাণের আপডেট টুইট করল ভারতীয় রেলওয়ে। এই মুম্বই-আহমেদাবাদ হাইস্পিড রেল প্রকল্পটিকে মানুষ সাধারণ ভাবে বুলেট ট্রেন প্রকল্প নামেই চেনে। রেল কর্তৃপক্ষ এই প্রসঙ্গে গুজরাটের নভসারিতে নদীর ওপর তিনটি নির্মিত সেতুর ছবি পোস্ট করে লিখেছে, ‘আগে ও এখন’। এই তিনটি সেতুই গত মাসে নির্মিত হয়েছে। ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচএসআরসিএল) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিলিমোরা এবং সুরাট হাই-স্পিড রেলওয়ে (এইচএসআর) স্টেশনের মধ্যে তিনটি সেতু তৈরি করা হয়েছে।
টুইট করা কোলাজের প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে, অম্বিকা নদীর ওপর একটি সেতু। ছবিগুলিতে জানুয়ারির শুরু থেকে জুনের শেষের দিক পর্যন্ত প্রায় ছয় মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ দেখানো হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, এই সেতুটি ২০০ মিটার দীর্ঘ। সেতুটি নির্মাণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল যেমন। নদীর তীরের খাড়া ঢাল এবং মাটির পাথুরে স্তরে ভূগর্ভস্থ পাইলিং করে কাজ এগিয়েছে। দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে পূর্ণা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি। ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যযুক্ত এই সেতুটিই নির্মিত তিনটি সেতুর মধ্যে দীর্ঘতম। ‘উচ্চ জোয়ারের সময় নদীর জলস্তর ৫ থেকে ৬ মিটার বাড়তে থাকায় নির্মাণের কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল’ জানিয়েছে এনএইচএসআরসিএল।
শেষ ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে মিনঢোলা নদীর ওপর নির্মিত ২৪০ মিটার দৈর্ঘ্যযুক্ত সেতুটি । আরব সাগরের নিকটবর্তী হওয়ায় এটি নির্মাণের সময় উচ্চ এবং নিম্ন জোয়ারের জল নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। এনএইচএসআরসিএল-এর হিসাব অনুসারে, ২৪টি সেতুর মধ্যে ৪টি গত ছয় মাসে নির্মিত হয়েছে। মুম্বই-আহমেদাবাদ হাই-স্পীড রেল (MAHSR) করিডোরে ২৪টি নদীসেতু রয়েছে, যার মধ্যে ২০টি গুজরাটে এবং ৪টি মহারাষ্ট্রে। গুজরাটের দীর্ঘতম নদী সেতুটি ১.২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটি নর্মদা নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের দীর্ঘতম সেতুটি বৈতরনা নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে, যার দৈর্ঘ্য ২.২৮ কিলোমিটার।
গুজরাটের ৮টি এইচএসআর স্টেশন যেমন- ভাপি, বিলিমোরা, সুরাট, ভরুচ, ভাদোদরা, আনন্দ, আহমেদাবাদ এবং সবরমতি ইত্যাদি স্টেশনের নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিক্ষেত্রেই কাজ চলছে জোর কদমে। প্রসঙ্গত, অনেক ক’টি ধাপে চালু হলে বুলেট ট্রেন প্রকল্প। প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বুলেট ট্রেন প্রকল্পের প্রথম পর্যায় ২০২৬ সালের মধ্যে চালু করা যাবে।