প্রকল্প ভাল। তবে হিন্দু দেবীর নামে কেন? লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে এমনটাই প্রশ্ন তুলেছিলেন বাম যুব নেত্রী মীনাক্ষ্মী মুখোপাধ্যায়। সেই তোপের পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
কী বলেছিলেন মীনাক্ষী?
বাম যুবনেত্রী বলেছিলেন, 'সমস্ত প্রকল্পের বিরোধিতা করতে পারি না। সরকারের একটা জনকল্যাণকর ভূমিকা থাকে। কিন্তু, যে রাজ্যে নানা জাতি, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গের মানুষ বাস করেন সে রাজ্যে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের ঠাকুরদেবতার নামে প্রকল্প করাটা শুভ বুদ্ধির সম্পন্ন মানুষ মেনে নেবে না বলেই আমার মত।'
মীনাক্ষীর মতে, এর বদলে কোনও মনীষী, কলাকুশলী, সাহিত্যিক বা ঐতিহাসিক চরিত্রের নামে প্রকল্পের নামকরণ করা যেত।
দেবাংশুর উত্তর
ফেসবুকে মীনাক্ষীকে পাল্টা জবাব দিলেন দেবাংশু। তিনি বলেন, 'বামফ্রন্টের একজন নেতা রয়েছেন। পদবি ইয়েচুরি। আমি সীতারাম ইয়েচুরির কথাই বলছি। তাঁর নামে সীতা ও রাম রয়েছেন। দু'জনেই হিন্দু ধর্মের দেব-দেবী। এদিকে আপনাদের পার্টিতে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মহম্মদ সেলিমও রয়েছেন। আপনার থিওরি যদি সত্য হিসেবে মানতে হয়, তাহলে তো সেলিমবাবু সীতারাম ইয়েচুরির নাম ধরেই ডাকতে পারবেন না। ওগো, কিগো, শুনছ বলেই ডাকতে হবে। তাই না? আশা করি, তিনি সেটা করেন না। সাধারণভাবেই ডাকেন। এখন আপনার দলের নেতাও তো সব ধর্মের নেতা।'
দেবাংশুর 'ওগো, কিগো, শুনছ' শুনে হাসির রোল ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে এখানেই থেমে যাননি দেবাংশু।
তিনি আরও বলেন, 'দুর্গা চানাচুর সব ধর্মের লোকজন খান। লক্ষ্মী নারায়ণ বস্ত্রালয়, মা মনসা রোল সেন্টারের খরিদ্দার হিন্দুও, আবার মুসলিমও। অন্যদিকে, নিজাম-আরসালান থেকেও সকলেই খাবার কেনেন। এখন আমার প্রশ্ন, তাহলে কী লক্ষ্মী নারায়ণ বস্ত্রালয় থেকে শুধুমাত্র হিন্দুরাই জিনিসপত্র কিনতে পারবেন? তাঁদেরই একমাত্র অধিকার রয়েছে এর? আর নিজামের রোল বা আরসালানের বিরিয়ানি কি শুধু মুসলিমরাই খাবেন?'
'আমাদের মা বাবারা তো লক্ষ্মী ছেলে মেয়ে বলে থাকেন। তাঁরা কি ধর্মের কথা মেনে এই কথাগুলো বলেন নাকি? একদমই না। তাঁরা আমাদের এই কথাগুলো বলেন কারণ আমাদের সমাজের সঙ্গে এগুলো মিশে গিয়েছে,' বলেন দেবাংশু।
লক্ষীর ভান্ডার নামকরণের কারণও তুলে ধরলেন দেবাংশু
দেবাংশু বলেন, 'মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৯০৫ সাল নাগাদ যখন স্বদেশী আন্দোলন শুরু হয় তখন সরলা দেবী চৌধুরানী লক্ষ্মীর ভান্ডার শুরু করেন। দুঃস্থ মহিলাদের হস্তশিল্পে উৎসাহিত করা হয় এবং এই লক্ষ্মীর ভান্ডারের মাধ্যমে গড়ে ওঠে ভারতবর্ষের প্রথম মহিলা সংগঠন। এটা হয় মীনাক্ষী জানেন না। লক্ষ্মীর ভান্ডারকে ধর্মের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। এর একটা ঐতিহাসিক দিক রয়েছে।'
দেখুন দেবাংশুর ভিডিয়ো :
মীনাক্ষী ও দেবাংশুর বক্তব্য নিয়ে আপনার কী মতামত? জানান কমেন্টে।
আরও পড়ুন : কলকাতাও লন্ডন হয়ে উঠুক, সেটা চান? এই তথ্য জানার পর সেই ইচ্ছা চলে যেতেই পারে!