নৃংশস এক ঘটনার সাক্ষী থাকল বিহারের দারভাঙ্গার জিএম রোড এলাকা। ঘটনা ঘটেছে গত ১০ ফেব্রুয়ারি। সন্ধে নামতেই রাত ৮ টা নাগাদ সেখানে জমি দখলের চেষ্টায় এলাকায় জেসিবি মেশিন আনে কয়েকজন। লক্ষ্য ছিল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে এলাকার একটি বাড়ি, আর তারপর দখল করা হবে সেই জমি। বুলডোজার দেখএই বাড়ির সদস্যরা তা রোখার চেষ্টা করেন। এরপরই বাড়ির তিনজন সদস্যের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে। এই হামলার ঘটনায় ৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ এদের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ঘটনার সময় ঘর বাঁচাতে বেরিয়ে পড়েছিলেন পরিবারের মেয়ে পিঙ্কি ঝা। তিনি আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আর তাঁকেও রেয়াত করেনি জমি দখলকারীরা। ওই আটমাসের অন্তঃসত্ত্বার গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তখনই জানা যায়, শরীরে দহনের জেরে পিঙ্কি হারিয়েছেন তাঁর সন্তানকে। এরপরই তিনি আহত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। ৩৬ বছরের পিঙ্কির মৃত্যু শোকে যখন পরিবারে আর্তনাদ তখনই জানা যআয়, তার ভাই সঞ্জয় ঝাও প্রবলভাবে আহত অগ্নিকাণ্ডের জেরে। তিনিও গুরুতর অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন পটনা হাসপাতালে। চলছে তাঁর চিকিৎসা।
শুধু পিঙ্কি ও সঞ্জয়ই নন, আগুন ধরানো হয় তাঁদের ছোটবোন নিকির গায়েও। তাঁর দেহের নিম্নাংশে গুরুতর আঘাত লেগেছে। দিদির মৃত্যুর পর তিনি মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। নিকি বলেন, ঘটনার দিন বারবার পুলিশের কাছে সাহায্য চাওয়া হলেও তাঁরা যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। নিকি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তাঁরা বারবার পুলিশের সুপারিন্টেডেন্টকে ফোন করেন পরিবারের লোকজন, তবে অভিযোগ তাঁদের বক্তব্যে কর্ণপাত করেননি পুলিশ। পরের দিন পুলিশের সুপারিন্টেডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা করেননি, শুধু ফোনে কথা বলেন। নিকি জানান সেই রাতে ৪০ জন দুষ্কৃতী তাদের বাড়িতে হামলা করেছিল। নিকি জানান, তাঁদের অজ্ঞাতেই তাঁর মায়ের মামতুতো ভাই তাঁদের বাড়ির জমি বিক্রি করে দেন জনৈক শিবকুমার ঝাকে। গত চারদশক ধরে বসবাস করা বাড়িতে এরপর থেকেই চলে বিভিন্ন ধরনের হামলা। ঘটনা ২০১৯ সাল থেকে বিচারাধীন। এদিকে, পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিহারের জন অধিকারী পার্টি প্রধান পপ্পু যাদব।