লাগাতার ২ মাসের বিশ্রামহীন পরিশ্রমের পর অবশেষে খাঁচা বন্দি হল উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরের ত্রাস সেই চিতাবাঘ। গত কয়েক মাসের মধ্যে এই চিতা বাঘটির হামলায় মৃত হয়েছে ৬ শিশুর। এছাড়াও ১২ জনেরও বেশি মানুষকে আহত করেছে চিতাবাঘটি। বন বিভাগের একাধিক দল ইনফ্রারেড ড্রোনের মতো উন্নত প্রযুক্তি এবং খাঁচা ব্যবহার করে অবশেষে বুধবার রাতে বেলওয়া গ্রামের কাছে ৫ বছর বয়সি ওই চিতাবাঘটিকে ধরে ফেলে। যদিও এরপরেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না স্থানীয়রা। কারণ সেখানে আরও একটি চিতাবাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: চিতাবাঘের তুমুল গর্জনে আতঙ্কে ডুয়ার্সের গ্রামবাসীরা, ভোর হতেই ঘটল ঘটনা
বলরামপুরের বিভাগীয় বন আধিকারিক এম সেমারান জানান, দুই মাসের প্রচেষ্টার পর বলরামপুর বন বিভাগের সীমান্তে অবস্থিত বেলওয়া গ্রামে একটি খাঁচায় চিতাবাঘটিকে সফলভাবে আটক করা হয়েছে। তিনি জানান, চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য বন বিভাগের কর্মীরা দিনে ১৮ ঘণ্টা ধরে নজরদারি চালাতেন এবং ড্রোনগুলি ব্যবহার করতেন। ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১৫টি খাঁচা পাতা হয়েছিল। তিনি জানান, ড্রোন ব্যবহার করে পায়ের ছাপ খুঁজে বের করা হতো। তারপর ধরার জন্য চিরাচরিত পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাগলের টোপ দিয়ে চিতাবাঘটিকে ফাঁদে ফেলা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, দলটি থার্মাল ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে চিতাবাঘের অবস্থান জানতে পায়। এরপর গ্রামের বাইরে আখ ক্ষেতের কাছে একটি ছাগল বেঁধে রাখা হয়। তাতেই ধরা দেয় চিতাবাঘটি। খাঁচা বন্দি করার পর চিতাবাঘটিকে কানপুর চিড়িয়াখানায় পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে এই চিতা বাঘ ধরার পরেও সেখানে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা দিয়েছে। ফলে আরও একটি চিতাবাঘ রয়েছে বলে সন্দেহ করেছে বন বিভাগ।
জানা গিয়েছে, গত ৪ নভেম্বর লালনগড়ের সিপাহিয়ায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে মেরে ফেলে চিতাবাঘটি। তার চার দিন পর আবার ৬ বছর বয়সি অরুণ ভার্মাকে মেরে ফেলে। এর পরে বন বিভাগের সমস্ত সাতটি রেঞ্জের দল সিদ্ধার্থনগর এবং বারাবাঙ্কির ডিএফওদের নেতৃত্বে চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য এলাকায় ক্যাম্প করেছিল। কিন্তু, চিতাবাঘটিকে ধরতে পারেনি দলটি।
অন্যদিকে, চিতাবাঘটি ১৬ নভেম্বর বেলওয়া গ্রামে ১০ বছরের বিকাশ এবং ২৪ নভেম্বর বাঙ্কটোয়া গ্রামের ৫ বছরের রীতেশ, ৩ ডিসেম্বর ভগবানপুরের ১০ বছরের অনুশকা এবং সমীর আনসারির উপর হামলা চালায়। ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য ১৫টি খাঁচা এবং ১৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল।