রাতে কার সঙ্গে কথা বলেন? কী কথা বলেন? 'টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার' মামলায় সংসদের এথিক্স কমিটির বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে এমনই সব ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন বিরোধী সাংসদরা। সেজন্য তাঁরা কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বলেও দাবি করেছেন। যদিও পালটা এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপির সাংসদ বিনোদ শংকর দাবি করেছেন, রেগে গিয়ে কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে খারাপ শব্দ ব্যবহার করেছেন মহুয়া। একইসুরে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দাবি করেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে এথিক্স কমিটির ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা করছেন তৃণমূল সাংসদ। আর কমিটির নেতৃত্বে যে একজন ওবিসি নেতা আছেন, সেটা বিরোধীরা মেনে নিতে পারছেন না বলে দাবি করেন নিশিকান্ত।
আজ সংসদের এথিক্স কমিটির বৈঠকে হাজির হন মহুয়া। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। তিনি দাবি করেন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করেছেন জয় আনন্দ দেহাদ্রাই। যে বৈঠকে মহুয়াকে সমর্থন জানান বিএসপি সাংসদ দানিশ আলি-সহ বিরোধী সাংসদরা। পালটা বিজেপি সাংসদরা দাবি করতে থাকেন যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কথা না বলে আসল বিষয় নিয়ে জবাবদিহি করুন মহুয়া।
সেইসবের মধ্যে এথিক্স কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মহুয়া এবং বিরোধী সাংসদরা। তারপর মহুয়া বলেন, ‘ওঁরা যা ইচ্ছা, তাই বলছেন। ভুলভাল বকছেন তাঁরা।’ একইসুরে বিএসপি সাংসদ দানিশ বলেন, ‘আমরা (এথিক্স কমিটির বৈঠক) থেকে ওয়াক-আউট করেছি, কারণ (মহুয়াকে প্রশ্ন করা হয় যে) রাতে কার সঙ্গে কথা বলেন? কী কথা বলেন? এটা কি চেয়ারম্যানের জিজ্ঞাসা করা উচিত?’
যদিও বিরোধীদের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান। শংকর বলেন, ‘মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা তদন্ত করে দেখাই হল কমিটির উদ্দেশ্য। কিন্তু সহযোগিতা করার পরিবর্তে রেগে গিয়ে প্যানেলের সদস্য এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বাজে কথা বলেন। কমিটির বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ করেন দানিশ আলি, গিরধারী যাদব-সহ বিরোধী সাংসদরা। দর্শন হিরানন্দানির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন নিয়ে যাতে জবাব দিতে না হয়, তাই তাঁরা বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান।’
উল্লেখ্য, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন করতে হিরানন্দানি গ্রুপের থেকে মহুয়া টাকা ও উপহার নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। জয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে সরব হন নিশিকান্ত। পরবর্তীতে শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি দাবি করেন, তাঁর থেকে উপহার নিয়ে আগানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতেন মহুয়া। এমনকী তাঁর সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। যদিও তিনি যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।