বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একদা ভারত ঘনিষ্ঠ দেশটিতে এখন চিনপন্থী সরকার আছে। আর এরই মাঝে কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন সেদেশের তিন মন্ত্রী। যার জেরে মলদ্বীপকে বয়কটের ডাক ওঠে ভারতে। এই সবের মাঝেই এবার রিপোর্টে দাবি করা হল, ভারত সফরে আসতে চাইছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। বর্তমানে তিনি চিন সফরে আছেন। এদিকে মুইজ্জুর ভারত সফরের প্রস্তাব দিল্লিতে পাঠিয়েছে মলদ্বীপ সরকার। তবে দিল্লি নাকি তাতে সেরকম আগ্রহ প্রকাশ করেনি। (আরও পড়ুন: উপকূলের ৩০ কিমি দূরে বঙ্গোপসাগরের এই জায়গা থেকে প্রথমবার তেল উত্তোলন ONGC-র)
উল্লেখ্য, এতবছর ধরে 'রীতি' হয়ে আসছিল যে মলদ্বীপে যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না কেন, তাঁর প্রথম বিদেশ সফর ভারতেই হয়। তবে মুইজ্জু গদিতে বসার পর প্রথমে তুরস্ক এবং পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সফরে গিয়েছিলেন। আর এখন তিনি চিন সফরে আছেন। এই আবহে মুইজ্জু ভারত সফরে আসতে চাইলেও তা নিয়ে আগ্রহ নেই দিল্লির। এদিকে এমনিতেই নিজের নির্বাচনী প্রচারে ভারত বিরোধী এজেন্ডা তুলে ধরেছিলেন মুইজ্জু। সেদেশে মোতায়েন ভারতের কয়েকজন সেনাকে প্রত্যাহারের দাবিও তুলেছেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের এক আমলার কথায়, 'দুই দেশের সম্পর্ক যখন খারাপ, তখন এত কম সময়ে এই ধরনের সফরের আয়োজন করা যায় না।' এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক আমলা বলেন, 'চিন সফরের পর মুইজ্জুর ভারত সফরের বিষয়টি আরও অসম্ভব মনে হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে সম্প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন মলদ্বীপের মন্ত্রী মালশা শরিফ, মারিয়াম শিউনা এবং আদুল্লা মাহজুম। এই আবহে তিনজনকেই পদ খোয়াতে হয়েছে। এই আবহে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে সোমবার তলব করা হয়েছিল মলদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম সাহিবকে। এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী মুসা জামির বলেছেন, অন্য দেশের নেতাদের অপমান করার মতো আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। তবে ভারতীয়রা ইতিমধ্যেই মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় 'বয়কট মলদ্বীপ'-এর রব উঠেছে। উল্লেখ্য, মলদ্বীপে গত দুই বছর ধরে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক গিয়েছে ভারত থেকেই। এই আবহে পর্যটন নির্ভর একটি অর্থনীতি হিসেবে ভারত বিরোধিতা করতে গিয়ে চাপে পড়েছে মলদ্বীপ। এই সবের মাঝেই চিনে গিয়ে মুইজ্জু আবেদন জানিয়েছেন, যাতে চিন থেকে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক তাঁর দেশে যায়।