শুক্রবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তথা মুম্বই হামলার মূল ষড়যন্ত্রী ও জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা প্রধান জাকিউর রেহমান লখভিকে নাশকতায় আর্থিক সহায়তার অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনের তিন ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি গ্রেফতার করার পরে প্রথম আদালতে হাজিরা দেওয়া লখভির বিরুদ্ধে এ দিন লাহোরের সন্ত্রাস দমন আদালতের স্পেশ্যাল বেঞ্চ কয়েক ঘণ্টার একমাত্র শুনানিতে সাজা ঘোষণা করে।
পাক আদালতের লস্কর প্রধানকে তড়িঘড়ি শাস্তি দেওয়ার ধরণ দেখে স্পষ্ট হয়েছে যে, আর্থিক মন্দায় ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান ফাইন্যানশিয়ল টাস্ক ফোর্সে-এর (FATF) আনুকূল্য পেতে কতটা মরিয়া ছিল।
এ দিনের শুনানিতে বিচারক এজাজ আহমেদ বুট্টার তাঁর রায়ে লখভিকে চিকিৎসালয় চালানোর আড়ালে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য অর্থ সাহায্য করার অপরাধে কারাদণ্ড ছাড়াও ৩,০০,০০০ পাকিস্তানি টাকা জরিমানা ধার্য করেছেন।
এর অনেক আগে ২০০৮ সালে মুম্বই সন্ত্রাস হামলায় ১৬৬ জনের মৃত্যুর জন্য লখভিকেই প্রধান ষড়যন্ত্রী হিসেবে অভিযোগ করেছে ভারত। ২০০৮ সালে তাঁকে পাকিস্তানে গ্রেফতার করা হলেও পরবর্তীকালে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। লখভির বিরুদ্ধে মজবুত সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি ভারত, দাবিকরেছে পাকিস্তান।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ লখভিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তালিকায় ঠাঁই দিয়েছে। তাঁকে ওই তালিকায় লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের ওকারা জেলায় লখভির জন্ম। ওই জেলারই সন্তান আজমল আমির কাসভ মুম্বইতে সন্ত্রাস হামলায় জড়িত ১০ জনের মধ্যে একমাত্র জীবিত সন্ত্রাসবাদী ছিল। নব্বইয়ের দশকে লস্কর-এর অভিভাবক সংগঠন জমিয়ত আহল-ই-হাদিথ এর সদস্য ছিলেন লখভি। নব্বইয়ের দশকেই লাহোরের কাছে মুরিদকে অঞ্চলে লস্কর-এর প্রধান ঘাঁটিতে বহাল হন তিনি। পরবর্তীকালে জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয় ভাবে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই জঙ্গি নেতা।