প্রথমে ছিল দুর্দান্ত ছবি। তারপর সামনে এসেছিল ভিডিয়ো। এবার মঙ্গলগ্রহের ছোটো হেলিকপ্টারের ওড়ার শব্দ প্রকাশ করল মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। যা লালগ্রহের প্রথম অডিয়ো হওয়ার পাশাপাশি ইতিহাস তৈরি করেছে। এই প্রথম অপর কোনও গ্রহে একটি মহাকাশযান অপর একটি মহাকাশযানের শব্দ রেকর্ড করল।
নাসার ল্যান্ডার ও রোভার ‘পারসিভেরান্স’-এর 'ইনজেনুইটি' কপ্টারের (চার রোটর বিশিষ্ট একটি ড্রোন হেলিকপ্টার) পঞ্চম পরীক্ষামূলক উড়ানের ঠিক আগে সেই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার নাসার জেট প্রপুলেশন ল্যাবরেটরি। সেই দফায় নয়া একটি বিমান ওঠানামার জায়গায় একমুখী যাত্রা ছিল।
সপ্তাহখানেক আগে চতুর্থ পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় 'ইনজেনুইটি' কপ্টারের ব্লেড থেকে যে শব্দ তৈরি হচ্ছিল, তা কার্যত শোনা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল যেন বহুদূরে মশা বা কোনও পোকামাকড় উড়ছে। ‘পারসিভেরান্স’-এর সঙ্গে যুক্ত এক বিজ্ঞানী বলেন, ‘এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত চমকে দেওয়ার মতো বিষয় ছিল। আমরা যখন পরীক্ষা চালিয়েছিলাম, তখন বলা হয়েছিল যে মাইক্রোফোনেও তেমন শব্দ ধরা পড়বে না।’
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি লালগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ফেলে নাসা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, সেদিন গভীর রাতে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছে যায় ল্যান্ডার ও রোভার ‘পারসিভেরান্স’। সেই সময় রোভারের এন্ট্রি, ডিসেন্ট এবং ল্যান্ডিং দলের প্রধান আল চেন জানিয়েছিলেন, আদতে যেখানে নামার কথা ছিল, তার এক মাইলের মতো দক্ষিণ-পূর্বে নেমেছে ‘পারসিভেরান্স’। শেষ পর্যায়ে নিজে থেকেই অবতরণের জন্য সবথেকে সুরক্ষিত জায়গা বেছে নেয় রোভার। সেই ‘পারসিভেরান্স’-এর মধ্যে ছিল 'ইনজেনুইটি'। ১৯ এপ্রিল প্রথমবার ওড়ে সেই চার রোটর বিশিষ্ট ড্রোন হেলিকপ্টার। তার ফলে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনও গ্রহে কপ্টার ওড়ানোর নজির তৈরি হয়। আপাতত লালগ্রহে আরও সাবলীল হচ্ছে 'ইনজেনুইটি'। যা তারপর এলাকার ভূতাত্ত্বিক গঠন, অতীতের আবহাওয়ার জানার চেষ্টা করবে। সেই সঙ্গে প্রাণের সন্ধানে চলবে খোঁজ।