ন্যাশনাল হেরাল্ড সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতি মামলায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের জেরা এখনও শেষ হয়নি। একদিনের বিরতির পর আগামিকাল আবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে রাহুলকে। আগামিকালও প্রশ্নের দীর্ঘ তালিকা থাকবে রাহুলের সামনে। এরই মাঝে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রাহুল ইডিকে বলেছেন যে কংগ্রেসের কাছ থেকে অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের (এজেএল) কয়েকশো কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের লেনদেনের জন্য কংগ্রেসের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ মোতিলাল ভোরা দায়ী ছিলেন৷
উল্লেখ্য ইয়ং ইন্ডিয়ান্স প্রাইভেট লিমিটেড নামক সংস্থার মাধ্যমে অ্যাসোসিয়েট জার্নাল কিনে নেন গান্ধীরা। সেই সংস্থার অধীনে প্রচুর স্থাবর সম্পত্তি ছিল, যেগুলিও গান্ধীদের হয়ে যায় এই চুক্তিতে। এই গোটা লেনদেনে অনিয়মের গন্ধ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তাই শুক্রবারও রাহুলকে তলব করে পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। সোনিয়া গান্ধীকেও এই একই মামলায় তলব করেছে ইডি।
রাহুলের জিজ্ঞাসাবাদ শুক্রবার অব্যাহত থাকবে কারণ তিনি বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। রাহুল এবং তাঁর মা সোনিয়া গান্ধীর কাছে ইয়ং ইন্ডিয়ার ৭৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাকি ২৪ শতাংশের মধ্যে সিংহভাগ শেয়ার অস্কার ফার্নান্দেসের কাছে (১২ শতাংশ)। ভোরা এবং ফার্নান্দেস যথাক্রমে ডিসেম্বর ২০২০ এবং সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে মারা যান।
অ্যাসোসিয়েট জার্নাল লিমিটেড কিনতে কি কংগ্রেসের ফান্ডের অপব্যবহার করেছিলেন গান্ধীরা? এখন এই প্রশ্নেরই জবাব খুঁজছেন তদন্তকারীরা। ন্যাশনাল হেরাল্ড অর্থ তছরুপের মামলায় গত কয়েকদিনে দফায় দফায় প্রায় ৩০ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। এই সময় রাহুলকে নাকি কংগ্রেসের ফান্ডের সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালে জওহরলাল নেহরুর হাত ধরে পথ চলা শুরু ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর৷ স্বাধীনতার পর কাগজটি মূলত কংগ্রেসের মুখপত্রে পরিণত হয়৷ পত্রিকাটির প্রকাশক অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড৷ এর মালিকানা ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড৷ ২০০৮ সালে আর্থিক ক্ষতির কারণে ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সোনিয়া গান্ধি৷ এরপর ২০১১ সালে ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড নামক কোম্পানি গঠন করেন তিনি৷ যাঁর ৭৬ শতাংশ অংশীদারি কংগ্রেস সভানেত্রী এবং তাঁর পুত্র রাহুলের৷ এর সূত্র ধরেই ২০১৩ সালে অর্থ তছরুপের অভিযোগ আনেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণিয়াম স্বামী৷ পরে ২০১৫ সালে ইয়ং ইন্ডিয়া একটি অলাভজনক কোম্পানি হওয়ায় এর বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে ইডি৷ বর্তমানে এই মামলায় আগাম জামিন নিয়ে মুক্ত আছেন রাহুল ও সোনিয়া।