শ্বেতা মুদালিয়ার
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্য়াটিক রিফর্মস (ADR)। সম্প্রতি তাদের সমীক্ষায় ভারতের জাতীয় স্তরের পার্টিগুলির বিপুল আয় নিয়ে চমকে দেওয়া রিপোর্ট সামনে এসেছে। তাদের দাবি ২০০৪-০৫- ২০২১-২২ পর্যন্ত সর্বভারতীয় দলগুলি শুধু অজানা উৎস থেকেই ১৭,২৪৯.৪৫ কোটি টাকা আদায় করেছে। সব মিলিয়ে আটটি সর্বভারতীয় দলের কথা উল্লেখ করেছে এডিআর। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিজেপি, জাতীয় কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, এনসিপি, বহুজন সমাজ পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশানাল পিপলস পার্টির উপর এই সমীক্ষা করা হয়েছিল। এই দলগুলি যে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিয়েছে ও নির্বাচন কমিশনের কাছে ডোনেশন সংক্রান্ত হলফনামা জমা দিয়েছিল তার ভিত্তিতেই এই হিসেব করা হয়েছে। সেই হিসেব অনুসারে দেখা যাচ্ছে সর্বভারতীয় জাতীয় দলগুলি ওই নির্দিষ্ট বছরগুলির মধ্যে ২১৭২.২৩১ কোটি অজানা উৎস থেকে সংগ্রহ করেছে। ১৮১১.৯৪২৫ কোটি টাকা ইলেকটোরাল বন্ড থেকে অর্জিত বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে সাধারণত পার্টিগুলির যে সোর্স থেকে ইনকাম হলে জানা যায় সেগুলি হল সম্পত্তি বিক্রি করা, মেম্বারশিপ আদায় করা, ব্যাঙ্কের সুদ, বই বিক্রি করা, পার্টির লেভি আদায়। এইগুলি মিলিয়ে তাদের আয় দেখা যাচ্ছে ৩৩৬.৩৩৫ কোটি। অর্থাৎ মোট আয়ের এটি হল মাত্র ১০.২২ শতাংশ।
আর অজানা সোর্স থেকে পার্টিগুলির মোট আয় জানলে চমকে যাবেন। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বিজেপি জানিয়েছিল অজানা সোর্স থেকে তাদের ঘোষিত আয় ১১৬১.০৪৮৪ কোটি টাকা। এটি হল জাতীয় দলগুলির অজানা সোর্স থেকে মোট আয়ের ৫৩.৪৫ শতাংশ। ওই আর্থিক বছরে কংগ্রেস জানিয়েছিল অজানা সোর্স থেকে তাদের আয়ের পরিমাণ ৩৮৮.৮৩৯৭ কোটি টাকা। এটি হল সর্বভারতীয় পার্টিগুলি অজানা সোর্স থেকে যে আয় করেছে বলে দাবি করেছে তার ৭১.৮৪ শতাংশ।
এডিআরএর রিপোর্ট অনুসারে ২০০৪-০৫ থেকে ২০২১-২২ আর্থিক বছরের মধ্য়ে কংগ্রেস ও এনসিপি শুধু কুপন বিক্রি করে সব মিলিয়ে ৪৩৯৮.৫১ কোটি টাকা আয় করেছে।
এদিকে পর্যবেক্ষকদের মতে অজানা সোর্স থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে দেশের একাধিক সর্বভারতীয় দল। বর্তমানে ২০ হাজার টাকার নীচে কেউ পার্টিকে দান করলে তার নাম না প্রকাশ করলেও কোনও ক্ষতি নেই।তারই ফলশ্রুতিতে বিপুল অঙ্কের টাকা পার্টির ফান্ডে জমা হলেও তার উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যাচ্ছে। সচরাচর এই কৌশলটাই করে রাজনৈতিক দলগুলি। সেক্ষেত্রে শুধু বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস একই সারিতে হাঁটছে।