এলএন রাও
নেপালে বসবাসকারী ভারতের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে নিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দাহাল প্রচণ্ডর সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পিটিআই সূত্রে খবর, তিনি জানিয়েছেন এক ভারতীয় ব্যবসায়ী যিনি নেপালেই থাকেন তিনি তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চেষ্টা করেছিলেন। সোমবার Roads to the valley: The legacy of Sardar Pritam Singh in Nepal' শীর্ষক একটি বইয়ের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে এই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই বিরোধীরা নানা মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। তার পদত্যাগের দাবিতেও সরব হয়েছেন তারা।
প্রচন্ড জানিয়েছিলেন, সর্দার প্রীতম সিং নেপালে ট্রাক ব্যবসাতে একেবারে পুরোধা ছিলেন। নেপাল-ভারত সম্পর্ক অটুট রাখতেও তিনি নানা সহায়তা করে গিয়েছেন। সেই সঙ্গেই তিনি বলে ফেলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতেও তিনি একটা সময় নানা চেষ্টা করেছিলেন।
প্রচন্ড জানিয়ে দেন, তিনি (সর্দার প্রীতম সিং) বার বার দিল্লিতে গিয়েছিলেন। কাঠমান্ডুর রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তিনি দফায় দফায় আলোচনা করে আমায় প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে তিনি চেষ্টা করে গিয়েছেন। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ভারত ও নেপালের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে একেবারে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সর্দার প্রীতম সিং।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে স্বাভাবিকভাবে শোরগোল পড়ে যায় নেপালে। নেপালের প্রধান বিরোধী দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল ( ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট) এদিন ন্যাশানাল অ্য়াসেম্বলিতে একেবারে তুলকালাম শুরু করে দেয়। তাদের দাবি অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। তাঁদের হট্টগোলের জেরে এদিন আইনসভার স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ এই সভার কাজ স্থগিত করে দেওয়া হয়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি জানিয়েছেন, ওসব কোনও ব্যাখা চাই না। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। তাঁর এই মন্তব্য় দেশের স্বাধীনতা, মর্যাদা, সংবিধান, সর্বোপরি সংসদের উপর আঘাত হেনেছে। বিরোধীরা বার বার দাবি করতে থাকেন, নেপালের যে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেছে দিল্লি তাকে আমরা চাই না। এই পদে বসে থাকার কোনও অধিকার তাঁর নেই।
এদিকে শাসকদলও এই মন্তব্যে খুশি নয়। সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশ্ব প্রকাশ শর্মা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা ঠিক নয়। অন্য়দিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দাহাল প্রচন্ডর দাবি, তাঁর মন্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্য়া করা হচ্ছে। অশান্তি পাকানোর জন্য় এসব করা হচ্ছে।