সংসদের উচ্চকক্ষে ছাড়পত্র পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়ে গেল ভারতীয় ভূখণ্ডকে নেপালের মানচিত্রে যুক্ত করার সংবিধান সংশোধনী বিল। ফলে লের যাবতীয় সরকারি কাজে নয়া মানচিত্র ব্যবহৃত হবে। যে মানচিত্রে ভারতের লিমপিয়াধুর, লিপুলেখ এবং কালাপানিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দেখিয়েছে কাঠমান্ডু।
বৃহস্পতিবার সংসদের উচ্চকক্ষেও পাশ হয়ে যায় সেই বিল। সেই ছাড়পত্র যে মিলবে, তা প্রত্যাশিত ছিল। শুধু ভোটের মার্জিন নিয়েই যাবতীয় প্রশ্ন ছিল। আর বিলের ভোটাভুটিতে বিলের বিরুদ্ধে একটি ভোটও পড়েনি। পক্ষে পড়ে ৫৭ টি ভোট।
গত মাসে যখন লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তা চালু করে ভারত, তখন থেকে দু'দেশের মধ্যে ভারত সীমান্ত বিবাদ বেড়ে যায়। কৈলাস মানস সরোবরের তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সেই রাস্তা চালু করা হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে ভারত। যদিও সেই রাস্তা নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে নেপাল। তারপরই দ্রুত ভারতীয় তিন অঞ্চলকে যুক্ত করে নয়া মানচিত্র প্রকাশ করে কাঠমান্ডু। সংবিধানের তিন নম্বর শিডিউলে অন্তর্ভুক্ত নেপালের রাজনৈতিক মানচিত্রকে সংশোধন করার জন্য দ্রুত বিলও পেশ করা হয়। গত সপ্তাহের তা সহজেই সংসদের নিম্নকক্ষের মান্যতা পায়।
তারপর কড়া বিবৃতি দেয় ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, নেপালের পদক্ষেপের কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই এবং তা কোনওভাবে ধোপে টিকবে না। পাশাপাশি, আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিবাদ মেটানোর বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তাও ভঙ্গ করেছে নেপাল। তাতেও অবশ্য পিছু হটেনি প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার। বরং ভারতের প্রস্তাবের কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। এমনকী সংসদ এবং দেশবাসীর কাছেও নয়াদিল্লির প্রস্তাব দেওয়ার প্রসঙ্গটি বেমালুম চেপে যান ওলি।
তা সত্ত্বেও নেপালের মানভঞ্জনের চেষ্টা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে নেপালের একটি বিশেষ রুটি-বেটির সম্পর্ক আছে। দুনিয়ার কোনও শক্তি সেটাকে ভাঙতে পারবে না। কোনও বিভেদ থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা সম্ভবপর হবে বলেই আশাপ্রকাশ করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তাতে যে চিঁড়ে ভেজেনি, তা বৃহস্পতিবার আরও একবার প্রমাণিত হল।