গোমাংস পরিবহণ সংক্রান্ত একটি মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, উত্তরপ্রদেশের প্রিভেনশন অফ কাউ স্লটার আইন অনুযায়ী, গোমাংস পরিবহণ নিষিদ্ধ নয়। এই আইনে এমন কোনও বিধান নেই যা গোমাংস পরিবহণ নিষিদ্ধ করে। তাই গোমাংস পরিবহণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না ওয়াসিম আহমেদ নামে এক ব্যক্তির আবেদনের মামলায় এমন পর্যবেক্ষণ বিচারপতি পঙ্কজ ভাটিয়ার বেঞ্চের।
আরও পড়ুন: গরুর মাংস আছে গাড়িতে? সন্দেহের বশেই পিটিয়ে খুন যুবককে, গো রক্ষকদের দাপট নাসিকে
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওয়াসিম উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলার বাসিন্দা। গোমাংস পরিবহণের অভিযোগে তার বাইক বাজেয়াপ্ত করে ছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্টে জানতে পারেন যে ওয়াসিম গোমাংস বাইকে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ওয়াসিম বিপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে না পারায় তার গাড়িটি গোহত্যা বিরোধী আইনে বাজেয়াপ্ত করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওয়াসিম। সোমবার উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানির পর আদালত জানায় গোহত্যা প্রতিরোধ আইনের ধারা ৩ অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশের মধ্যে যে কোনও স্থানে গরু, ষাঁড় হত্যা নিষিদ্ধ এবং আইনের ৫-এ (১) ধারা অনুযায়ী, রাজ্যের বাইরে থেকে অন্যান্য জায়গায় ও অন্য রাজ্য থেকে এরাজ্যে সরকারের অনুমতি ছাড়া পরিবহণ নিষিদ্ধ। কিন্তু রাজ্যের অভ্যন্তরে এমন কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে, বর্তমান ক্ষেত্রে এই রাজ্যে দুটি জায়গায় একটি গাড়িতে গোমাংসের পরিবহণ নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত নয়। তাই এই আইন লঙ্ঘন করে গোমাংস পরিবহণ করার যে অভিযোগ উঠেছে সেটা ঠিক নয়। ফলে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেটিও কার্যকর হবে না। আদালত আরও জানায়, যে বাজেয়াপ্ত করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা ওই আইনের ৫-এ (১) ধারার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ফলে নিম্ন আদালতের এই নির্দেশ ঠিক নয়। এই বলে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। অন্যদিকে, সম্প্রতি গুজরাট হাইকোর্ট একটি মামলায় অবৈধভাবে গোমাংস এবং মোষের মাংস রফতানির ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে গোমাংস পাওয়া গেলে লাইসেন্স বাতিল করা এবং গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।