ক্ষুধার বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই এবং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রক্রিয়ার উন্নতিসাধনে উল্লেখযোগ্য অবদানের কারণে ২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতল রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প (WFP)।
শুক্রবার অসলো শহরে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপকের নাম ঘোষণা করেন নরওয়ের নোবেল কমিটির চেয়ারউওম্যান বেরিট রিস-অ্যান্ডারসেন। কোভিড অতিমারীর প্রকোপে অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে ক্ষীণ ছিল বলে জানা গিয়েছে।
অনুষ্ঠানে রিস-অ্যান্ডারসেন বলেন, খিদের তাড়নার সম্মুখীন হওয়া কোটি কোটি মানুষের দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশেই WFP-কে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, পৃথিবীর একাধিক দেশে খিদেকে যুদ্ধ ও সংঘাতের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ক্ষুধার্তের মুখে খাদ্যতুলে দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সংস্থায় মুক্তহস্তে অর্থদানের আর্জিও এ দিন জানিয়েছেন রিস-অ্যান্ডারসন। কোভিড আক্রান্ত বিশ্বে খাদ্যাভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সফল হতে WFP-র হাত মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন চেয়ারউওম্যান।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন WFP। সংকটকালে মানবাধিকার রক্ষা এবং বহুস্তরীয় সহযোগিতার বাতাবরণ তৈরি করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে খাদ্য আমাদের অন্যতম মৌলিক চাহিদা।’
চলতি বছরে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাবিত হয়েছিল মোট ৩১৮ জন প্রার্থীর নাম। এর মধ্যে ছিলেন ২১১জন ব্যক্তি এবং ১০৭টি সংগঠন।
এ বারের নোবেল শান্তি পুরস্কারের দৌড়ে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাঁর সমালোচক গ্রেটা থানবার্গ, রাশিয়ার বিরোধী তথা কারারুদ্ধ নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং কোভিড অতিমারী মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অবদানকারী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
নোবেল কমিটির ঘোষণা পরে ট্রাম্প জানিয়েছেন ২০১৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার আসলে তাঁরই পাওয়া উচিত ছিল। এরিট্রিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের ফলে শেষ পর্যন্ত পুরস্কার পান ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদ।
হোয়াইট হাউসের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম মনোনীত করা হয়েছে। ইজরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও বাহরাইনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় মধ্যস্থতার জন্যই তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।