বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই অর্থকষ্টে ভুগছে পাকিস্তান। বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে ডলারের বদলে জমছিল ধুলো। তবে এরই মাঝে কিছুটা স্বস্তি পেল পাক সরকার। দু'দিন আগেই সৌদি আরব থেকে ২ বিলিয়ন ডলার পেয়েছিল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পাকিস্তানি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। আর এবার পাকিস্তানকে তিন বিলিয়ন ডলারের অর্থসাহায্য দেওয়ার প্যাকেজে অনুমোদন দিল আইএমএফ। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১.২ বিলিয়ন ডলার পাবে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানি মুদ্রায় যা ৩২,৯১৩ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ কয়েক মাসের আলোচনা, দর কষাকষির পর শেষ পর্যন্ত আইএমএফ-কে ঋণ দিতে রাজি করাতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। এই আবহে আইএমএফ-এর কর্তাদের সঙ্গে গতমাসেই চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছিল। আর গতকাল সেই চুক্তি অনুযায়ী আইএমএফ-এর বোর্ড পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে গত ১১ জুলাই পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানকে ২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে সৌদি। এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সৌদি।
বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি বড্ড অস্থির। অর্থসংকটের জেরে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার রকেট গতিতে ছুটছিল এতদিন। আলু, আটা, গম, চা, ডিম, চালের দাম আকাশছোঁয়া সেই দেশে। এই আবহে মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বড় পদক্ষেপ করেপাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক সুদের হার ১০০ বেসিস পয়েন্ট বা ১ শতাংশ বাড়িয়ে ২২ শতাংশ করে সেদেশের স্টেট ব্যাঙ্ক। এর আগে গত একবছরে একাধিক রিপোর্টে উঠে এসেছে যে রেশনের আটা পেতে গিয়ে সাধারণ মানুষ পদপিষ্ট হয়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বেলুনে ভরে রান্নার গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। এই আবহে পাকিস্তানের অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়ার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সৌদি ও আইএমএফ-এর অর্থসাহায্যে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখতে পাচ্ছ পাকিস্তান। প্রসঙ্গত, গত একবছরে সেদেশে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ৩৭.৯৭ শতাংশ। এত হারে এর আগে কোনওদিনই মুদ্রাস্ফীতির সাক্ষী থাকেনি পাকিস্তান। বর্তমানে সেদেশের মুদ্রার দর হু হু করে পড়ছে। বর্তমানে পাকিস্তানের ১ টাকার দাম ভারতের মুদ্রায় মাত্র ৩০ পয়সা। এদিকে ১ ডলারের দাম পাকিস্তানি মুদ্রায় ২৭৪.২৮ টাকা।