অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে পাকিস্তানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াল সৌদি আরব। মঙ্গলবার, ১১ জুলাই পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে সৌদি। এতে দেশটির অর্থনীতিতে কিছুটা গতি আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, এই ধরনের সহায়তার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকে আমি সৌদি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু আইএমএফ বেলআউটের আশঙ্কায় তারা পাকিস্তানকে অর্থ বরাদ্দ করার প্রক্রিয়াটি স্থগিত করে দেয়। স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তানে অর্থ জমা দেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে সহায়তা প্যাকেজের জন্য অপেক্ষা করে তারা। এই সাহয্য পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিবর্তনে সাহায্য করবে বলে সৌদি আরবকে ভাতৃপ্রতিম দেশ বলে অভিহিত করেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
অর্থনৈতিক সংকটের জেরে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা দেশটির। এই পরিস্থিতে বন্ধু দেশ সৌদি আরব এই সাহায্যের প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছিল। এই আর্থিক সহযোগিতা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিলকে শক্তিশালী করবে বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞকে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে তাদের পক্ষে কয়েক মাসের আমদানি খরচ মেটানোও সম্ভব নয় আর।
শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার এই বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে আইএমএফকে সন্তুষ্ট রাখার পাশাপাশি দেশের জনগণকেও সুরাহা দিতে মরিয়া প্রশাসন। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোই এখন চ্যালেঞ্জ প্রতিবশী দেশটির।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে পাকিস্থান নির্বাচন কমিশন । গত মঙ্গলবার নির্বাচনী সংস্থা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অবমাননার মামলার ভিত্তিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে। একই কারণে প্রাক্তন তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
বাংলাদেশকেও ছাড়িয়েছে পাক ঋণের পরিমান। বাংলাদেশের প্রতি নাগরিকের ঋণ যেখানে সাড়ে ২২ হাজার টাকা, সেখানে প্রতি পাকিস্তানির ঋণের পরিমাণ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা। এই বিপুল বোঝা কী ভাবে সরবে, উত্তর নেই কারও কাছেই। কারণের একের পর এক বৈদেশিক সাহায্য পেয়েও ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত নেই পাকিস্তানের অর্থনীতির। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চিনের পক্ষ থেকে অনুমোদন করা ৭০ কোটি ডলারের ঋণ পেয়েছিল পাকিস্তান। এর ফলে পাকিস্তানের বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে সাময়িক ভাবে সামাল দেওয়া গেলেও সমাধান হয়নি সংকটের। ফলে সৌদি সাহায্যের পরেও কোন পথে যায় সেদেশের অর্থনীতি, নজর রাখছে গোটা বিশ্ব।