চেক প্রজাতন্ত্র থেকে নিখিল গুপ্তাকে আমেরিকায় পাঠানো যাবে বলে রায় দিল প্রাগ হাই কোর্ট। উল্লেখ্য, খলিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিং মানকে হত্যার ছকের মামলায় অভিুক্ত নিখিল। বিগত প্রায় ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে চেক জেলে বন্দি তিনি। এই নিখিলের বিরুদ্ধে আমেরিকায় মামলা করা হয়েছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই আমেরিকা নিখিলকে তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে বিচার সম্পন্ন করতে চায়। জানা গিয়েছে, আদালতের রায়দানের পর এবার চেক প্রজাতন্ত্রের আইনমন্ত্রী পাভেল ব্ল্যাজেক এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। জানা গিয়েছে, হাই কোর্টের রায় নিয়ে যদি মন্ত্রী সন্দিহান হন, তাহলে তিনি সুপ্রিম কোর্টকে এই মামলাটির বিচার করতে বলতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে আগামী তিন মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টকে এই মামলার রায় রিভিউ করতে হবে। (আরও পড়ুন: রামমন্দির উদ্বোধনের আগে অযোধ্যা থেকে ধৃত ৩ সন্দেহভাজন, রয়েছে খলিস্তানি যোগ)
এর আগে মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের তরফে জানানো হয়েছিল, পান্নুনকে হত্যার ছক কষার অভিযোগে দায়ের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে নিখিল গুপ্তাকে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘খুনের জন্য বরাত দেওয়ার’ ধারায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। ভারত সরকারের এক এজেন্সির আধিকারিকের নির্দেশেই নাকি নিখিল এই কাজ করেন। তবে ভারত সরকারের যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাঁর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এই আবহে গত ৩০ জুন চেক প্রজাতন্ত্র থেকে নিখিলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অ্যাটর্নি অফিসের তরফে দাবি করা হয়, খলিস্তানি জঙ্গিকে হত্যার জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলারের রফা হয়েছিল। অগ্রিম বাবদ 'আততায়ী'-কে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হয়। তবে সেই 'আততায়ী' আদতে মার্কিন প্রশাসনেরই 'আন্ডার কভার এজেন্ট' ছিল। এরপরই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয় মার্কিন প্রশাসন। পরে ওয়াশিংটনের অনুরোধে চেক প্রজাতন্ত্র গ্রেফতার করেছিল নিখিলকে।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, শিখস ফর জাস্টিস প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে আমেরিকায় হত্যা করার ছক কষা হয়েছিল। তা নিয়ে ভারতকে সতর্ক করে আমেরিকা। ওয়াশিংটনের তরফ থেকে নাকি জানানো হয়, সেই হামলার ছকে দিল্লির যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত জুন মাসে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন, তখনই নাকি মার্কিন প্রশাসনের তরফ থেকে গুরপতবন্তের ওপর হামলার ছকের প্রসঙ্গটি উত্থাপিত করা হয়েছিল। এদিকে ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তার বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের ছক কষার অভিযোগ এনে মামলা রুজু করে আমেরিকার বিচার বিভাগ।
এরই মাঝে চেক প্রশাসন জানায়, আমেরিকার অনুরোধেই নিখিলকে তারা গ্রেফতার করেছে। এদিকে ভারতও মেনে নিয়েছে যে আমেরিকা থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য তাদের হাতে এসেছে। এবং এই গোটা ঘটনার তদন্তের জন্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দিল্লি। গত অগস্ট সৌদি রাজধানীতে এই ইস্যুতে নাকি কথা হয়েছিল মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান এবং ভারতের জাতীয় নিরপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের কথা হয়েছিল। সেই সময় নাকি মার্কিন এনএসএ ডোভালকে বলেছিলেন, এই ধরনের ঘটনা আমেরিকা বরদাস্ত করবে না। পাশাপাশি ভারত যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটায়, তা নিয়ে প্রতিশ্রুতিও চাওয়া হয়। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই ইস্যুতে সিআইএ প্রধান বিল বার্নসকে ভারতে এসে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংয়ের প্রধান রবি সিনহার সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন।