অতীতে দেখা হয়েছে অনেকবার কিন্তু জো বাইডেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথমবার। হোয়াইট হাউসে নরেন্দ্র মোদী ঢুকতেই যদিও উষ্ণ অভ্যর্থনায় স্বাগত জানালেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। তারপর সাংবাদিকদের সামনে অল্প কিছু বাক্য বিনিময়ের পরে বৈঠক হল দুই রাষ্ট্রনেতার। বৈঠক যে ইতিবাচক হয়েছে, সেটিতে সিলমোহর দিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। টুইটারে জানালেন দুর্ধর্ষ বৈঠক হয়েছে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে।
গতকালের হ্যারিস-মোদী বৈঠক থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে মার্কিন মুলুকে ক্ষমতা বদল হলেও দুই দেশের সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং আফগানিস্তানে তালিবান দখল নেওয়ার পর আরও সুদৃঢ় হতে পারে সম্পর্ক। এদিনও একে অপরকে প্রশংসায় ভরালেন দুই নেতা। বাইডেন বলেন দুই দেশের সম্পর্কে আরও শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। তিনি যে উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীনই এই কথা বলেছিলেন সেটাও মনে করিয়ে দেন বাইডেন। উত্তরে প্রধানমন্ত্রীও বলেন যে অতীতে বাইডেন তাঁকে জানিয়েছিলেন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা। এখন যে তিনি সেটা হাতে কলমে করে উঠতে পারছেন, তাতে খুশি মোদী।
মোদী বলেন যে একটি নতুন দশক শুরু হয়েছে। তাতে আমেরিকার নেতৃত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কেমন যাবে এই দশ বছর। দুই দেশের সম্পর্ক আরো নিবিড় হওয়ার বীজ বাইডেন পুঁতেছেন বলে প্রশংসা করেন মোদী। এদিন দুই দেশের সম্পর্কের এক নয়া অধ্যায়ের শুরু বলে জানান বাইডেন। তিনি বলেন যে সব চ্যালেঞ্জ আছে দুই দেশের সামনে সেগুলিকে যৌথ অঙ্গীকার নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।
এদিন ইন্দো-প্যাসিফিকে নিরাপত্তার বিষয়টি ও কোভিড নিয়ে বিশেষ ভাবে আলোচনা হয়। বাইডেন বলেন যে দুই দেশের দায়িত্ব আছে গণতান্ত্রিক রীতিকে ধরে রাখার, বৈচিত্র্য অক্ষুণ্ণ রাখার। প্রায় চল্লিশ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মুলুকে আছেন বলে তিনি জানান। একই সঙ্গে গান্ধী জয়ন্তীর প্রাক্কালে বিশেষ বার্তাও দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে গান্ধীজি বিভিন্ন দেশের মধ্যে যৌথ অংশীদারিত্বের কথা বলেছিলেন, যেটি আগামী দিনে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাণিজ্য যে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর হতে চলেছে সেটিও বলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি এটিও ধরিয়ে দেন যে এখানে অনেকটা কাজ এখনও বাকি আছে। বিশ্বহিতে প্রযুক্তির সুব্যবহারের ওপরও জোর দেন মোদী। পরে প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেন যে দুর্ধর্ষ বৈঠক হয়েছে।
তবে পরিবেশের বদল ও কোভিডের কথাটি বিশেষ করে উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে জো বাইডেনের সকালের টুইটে এই দুটি ইস্যু ছাড়াও ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়টি আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছিল। আমেরিকা ও ভারত সহ কোয়াড দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকেও এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।