আট বছরে তৃতীয়বার। বাংলার ট্যাবলোকে রাজধানীর মাটিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে জায়গা দিল না কেন্দ্রীয় সরকার। বিশ্বজয়ী কন্যাশ্রী প্রকল্পকে এবার স্থান দেওয়া হয়েছিল বাংলার ট্যাবলোয়। কিন্তু এবারও কেন্দ্রের বিষনজরে পড়ল বাংলার ট্যাবলো। ২০১৫ সালে ‘কন্যাশ্রী’তে সাজিয়ে ট্যাবলোর প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছিল বাংলা। তা খারিজ হয়ে যায়। ৯ বছর পর ২০২৪ সালের সাধারণতন্ত্র দিবসে কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠান থেকেও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বাংলার ট্যাবলোকে। এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলার ট্যাবলো ছিল ‘কন্যাশ্রী’। সুতরাং ২০২৪ সালের সাধারণতন্ত্র দিবসে নয়াদিল্লির কর্তব্যপথে থাকছে না বাংলা।
এদিকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মহিলাদের ক্ষমতায়নে সংরক্ষণ নীতির পথে হেঁটেছে মোদী সরকার। যদিও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। সেখানে কন্যাশ্রী প্রকল্প মেয়েদের সামাজিক প্রকল্প হিসাবে গড়ে তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রপুঞ্জে স্বীকৃতি পাওয়ার পরও কেন কন্যাশ্রী জাতীয় মঞ্চে স্থান পেল না? উঠছে প্রশ্ন। এক দশক ধরে চলছে কন্যাশ্রী। উপকৃত হয়েছেন ৮১ লক্ষেরও বেশি উপভোক্তা। খরচ হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তারপরও বাংলার সাফল্য কেন সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে তুলে ধরা যাবে না? এই প্রশ্ন নিয়ে যখন আলোড়ন পড়েছেন তখন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা কড়া বার্তা দিয়েছেন। মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই কন্যাশ্রী প্রকল্প রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারা বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে। সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্বীকৃতি পাচ্ছে না।’
অন্যদিকে শুধু বাংলা নয়, কোপ পড়েছে আরও কয়েকটি অবিজেপি রাজ্যের উপরও। বিহার, দিল্লি, পাঞ্জাব, কেরলের মতো বিরোধী রাজ্যগুলির ট্যাবলোও আগামী ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠান থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। এই বিষয়ে শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘এই ট্যাবলো খারিজের পিছনে কারণ আছে। আর সেটি হল, এই প্রকল্প বিজ্ঞানসম্মতভাবে নারীদের উন্নয়নে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। আর এই প্রকল্প সামনে আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা ফুটে উঠবে। তাই খারিজ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শহরের হকারদের একসারিতে আনা হবে, বর্ষবরণের প্রাক্কালে বড় সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার
এই ট্যাবলো নির্বাচনের দায়িত্ব থাকে কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ দলের উপর। তাদের সিলমোহর পেলেই তবে মেলে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র। এই বছরের নকশা যাচাই পর্যায় শেষ। তাই মডেল তুলে ধরার জন্য আর ডাক পাননি নবান্নের অফিসাররা। এই নিয়ে একইভাবে ২০১৫ সাল থেকে কন্যাশ্রী ছাড়াও তিনবার বাংলাকে নয়াদিল্লির কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করা থেকে বাদ দিল কেন্দ্র। ২০২২ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ট্যাবলো করতে চায় রাজ্য সরকার। তাতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। ২০২০ সালে ‘সেভ ওয়াটার সেভ লাইফ’ ও ২০১৮ সালে ‘একতাই সম্প্রীতি’। এটাও কি বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা? উঠছে প্রশ্ন।