নিশা আনন্দ
প্রায় এক দশক আগে নিখোঁজ হয়ে যান এক বাঙালি তরুণী। এতদিন পরে কাশ্মীরে খোঁজ মিলল তার। আর দীর্ঘ এক দশক পরে একটি রেডিও ক্লাব ও পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা হল তার। আর সেই তরুণীই এখন তিন সন্তানের মা। বারামুল্লাতে তিনি শনিবার তাঁর হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন। আনন্দে ভাসলেন সকলেই।
সূত্রের খবর, ওই মহিলা সম্প্রতি তাঁর দেওরের সহযোগিতায় জাতীয় মহিলা কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি শুধু এটুকু বলতে পেরেছিলেন সুন্দরবন এলাকায় তাঁর বাড়ি ছিল। জয়নগর স্টেশনের কাছেই ছিল তাদের বাড়ি।
এরপর জাতীয় মহিলা কমিশন সেই মহিলার বাড়ি খোঁজার ব্যাপারে তৎপর হন। পশ্চিমবঙ্গের একটি রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাদের মাধ্যমে মহিলার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বারুইপুর মহিলা পুলিশ স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছিলেন, বারুইপুর মহিলা থানার মাধ্য়মে আমরা দেউলবাড়ি গ্রামে তার পরিবারের সন্ধান পাই। এটা কুলতলি থানার মধ্য়ে পড়ে। এরপর কাশ্মীরের দিকে রওনা দেন ওই হারিয়ে যাওয়ার মহিলার মা, ভাই সহ অন্যান্যরা।
১৪ জুন তাঁরা কাশ্মীরের দিকে রওনা দিয়েছিলেন। এরপর দেখা হয় মেয়ের সঙ্গে। ওই পরিবার যাতে কাশ্মীরে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন সেকারণে জার্নির খরচের অনেকটাই পুলিশের লোকজনও দিয়েছিলেন।
এদিকে অদ্ভূতভাবে এতবছর কাশ্মীরে থাকার জন্য় তিনি বাংলা ভুলে গিয়েছেন। একজন দোভাষির মাধ্যমে তাঁকে বোঝানো হয়। কিন্তু প্রথম দিকে তিনি অচেনা লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন না। এরপর কাশ্মীরের রেডিও ক্লাবের সদস্যরা স্থানীয় এনজিওর মাধ্যমে ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। ধীরে ধীরে সহজ হন তিনি। তাঁর স্বামী কাশ্মীরে স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি করেন।
এদিকে রেডিও ক্লাবের সেক্রেটারি জানিয়েছেন, তরুণী থাকাকালীন তিনি এক আত্মীয়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এরপর আত্মীয় ফিরে এলেও তরুণী ফেরেননি। সেই আত্মীয় তাদের বলেছিল মেয়েটির ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। চিন্তা করতে হবে না। এদিকে ওই গরিব পরিবার আত্মীয়ের উপর নির্ভরশীল থাকার জন্য তারা আর এনিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু মেয়ের দীর্ঘদিন ধরে দেখা না মেলায় তারা শেষ পর্যন্ত ওই আত্মীয়ের সঙ্গে যাবতী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তবে শেষ পর্যন্ত তারা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি।