ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর বিরোধী জেলবন্দি নাভালনির দাবি, জনমত ক্রমশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। মানুষ যেন প্রতিবাদ চালিয়ে যান।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে রাশিয়াজুড়ে ১৩ হাজার ৬৫০ জন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অবস্থায় রাশিয়ার মানুষকে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে বললেন জেলবন্দি নেতা নাভালনি। নাভালনি টুইট করে বলেছেন, 'রাশিয়ার মানুষ পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণ সমর্থন করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবই একুশ শতকের ইতিহাসে রাশিয়ার অবস্থান ঠিক করে দেবে।'
'রক্তাক্ত অভিযান শেষ হোক'
নাভালনি মোট ১৪ টি টুইট করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, 'পুতিন যেভাবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে মারছেন, জীবনধারণের পক্ষে অতি প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ধ্বংস করছেন, তা যদি রাশিয়ার মানুষ সমর্থন করেন, সেটা এক কথা। আর যদি রাশিয়ার মানুষ পুতিনের এই অভিযানের বিরোধিতা করেন, তাহলে কাহিনিটা পুরো বদলে যায়।'
নাভালনি লিখেছেন, 'জনমত এখন পুতিনের দিক থেকে সরে যাচ্ছে।' তিনি তাঁর সহযোগীদের করা একটি জনমত সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে বলেছেন, 'পুতিন দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছেন। রাশিয়া আগ্রাসনকারী, এই অভিমত আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর যাঁরা মনে করেন, রাশিয়া আসলে শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য এই কাজ করছে, তাঁদের সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়েছে।'
নাভালনির বক্তব্য, 'এই পরিবর্তনের বার্তাটা স্পষ্ট, মানুষ বুঝতে পারছেন এই বিরোধ উসকে দেওয়ার জন্য কারা দায়ী। কেন যুদ্ধ করা হয়েছে, তার ফল কী হবে সেটাও মানুষ বুঝতে পারছেন।'
'ক্রেমলিন উদ্বিগ্ন'
নাভালনি টুইট করে দাবি করেছেন, 'রাশিয়ার মানুষের এই মনোভাব দেখে ক্রেমলিন উদ্বিগ্ন। যত তারা নার্ভাস হচ্ছে, ততই বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে।'
নাভালনি এখন জালিয়াতির অভিযোগে আড়াই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা অবশ্য দাবি করেছেন, জালিয়াতির সব অভিযোগই মিথ্যা ও বানানো। নাভালনির দাবি, তাঁকে জেলে রাখার কারণ, তিনি যাতে পুতিন-বিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করা।
গত মাসেই রাশিয়ার কর্মকর্তারা নাভালনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি তাঁর রাজনৈতিক সংগঠনের ৪৭ লাখ ডলার চুরি করেছে। যদি এই নতুন মামলাতেও তিনি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তাঁকে আরও দশ বছর জেলে থাকতে হবে।
নাভালনি চান
নাভালনি চান, ‘যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ যেন না থামে প্রতিবাদ যেন চলতেই থাকে।’ তিনি টুইট করে বলেছেন, 'যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ এখন গতি পাচ্ছে। কোনও পরিস্থিতিতেই তা যেন না থামানো হয়। মানুষকে এই লড়াই নিয়ে সত্যিকারের তথ্য জানাতে হবে।'
গত সপ্তাহেই পুতিন যে আইনে সম্মতি দিয়েছেন, তা হল, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে 'মিথ্যা খবর' প্রকাশ করলে কারাদণ্ড হবে। এর প্রভাব স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের উপর পড়েছে। আর ডিডাব্লিউ-সহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সংবাদসংস্থাকে রাশিয়া ব্লক করে দিয়েছে। ফেসবুক ও টুইটারের উপরেও সেখানে কোপ পড়েছে। এর ফলে স্বাধীন সূত্র থেকে খবর পাওয়ার সুযোগ রাশিয়ার মানুষের কাছে বিশেষ থাকছে না।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)