খারকিভে ভারতীয় পড়ুয়াদের ‘জোরজবরদস্তি’ আটকে রাখা হয়েছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলল রাশিয়া। মস্কোর দাবি, ভারতীয়দের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করার জন্য প্রস্তুত আছে রাশিয়ার বাহিনী। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা কিয়েভের দাবি, রাশিয়ার লাগাতার গোলাবর্ষণের কারণেই ভারত, পাকিস্তান, চিন-সহ অন্যান্য দেশের পড়ুয়ারা খারকিভে আটকে পড়েছেন।
বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়, ভারতীয় পড়ুয়ারা খারকিভ ছেড়ে রাশিয়ার বেলগোরোডে আসতে চাইলেও তাঁদের ‘জোরজবরদস্তি’ আটকে রেখেছে ইউক্রেন। ভারতীয়দের ‘আটকে রাখা হয়েছে এবং পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে তাঁদের ইউক্রেন ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’ এমন জায়গা দিয়ে তাঁদের যেতে বলা হচ্ছে, যেখানে লড়াই হচ্ছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। বিবৃতিতে ক্রেমলিনের তরফে বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধারের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আমাদের বিমান বা ভারতের বিমানের মাধ্যমে তাঁদের রাশিয়ার ভূখণ্ড থেকে দেশে ফেরানো হবে। যেমনটা ভারত প্রস্তাব দেবে, (সেভাবেই তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে)।’
যদিও রাশিয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কিয়েভ। ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে খারকিভ এবং সুমিতে রাশিয়াকে হামলা বন্ধ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে ‘আমরা বিদেশি পড়ুয়া-সহ সাধারণ নাগরিকদের ইউক্রেনের তুলনামূলক সুরক্ষিত শহরে পাঠানোর বন্দোবস্ত করতে পারি।’ কিয়েভের তরফে বলা হয়েছে, আবাসনে ‘রাশিয়ার সামরিক বাহিনী লাগাতার গোলাবর্ষণ এবং পৈশাচিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ফলে (খারকিভ) ছাড়তে পারছেন না ভারত, পাকিস্তান, চিন-সহ অন্যান্য দেশের পড়ুয়ারা।’ সঙ্গে ইউক্রেনের তরফে বলা হয়েছে, ‘আমরা ভারত, পাকিস্তান এবং চিনের সরকারের অবিলম্বে আর্জি জানাচ্ছি, খারকিভ এবং সুমিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে আপনাদের যে পড়ুয়ারা আটকে আছেন, তাঁদের ইউক্রেনের শহরে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করার জন্য মস্কোর কাছে নিজেদের দাবি জানান।’
এমনিতে বুধবার বিকেলে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) টুইটারে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে বলা হয়, ‘খারকিভে সকল ভারতীয়দের জন্য জরুরি অ্যাডভাইজর। নিজেদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে তাঁদের খারকিভ ছাড়তে হবে। যত দ্রুত সম্ভব PESOCHIN, BABAYE এবং BEZLYUDOVKA-তে চলে যান। যে কোনও পরিস্থিতিতে আজ সন্ধ্যা ছ'টার মধ্যে তাঁদের অবশ্যই সেখানে পৌঁছাতে হবে।’ কিন্তু এমন কী হল যে এভাবে তড়িঘড়ি খারকিভ ছাড়তে বলা হল, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তারইমধ্যে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, রাশিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সেই ‘আদেশ’ দিয়েছে ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানান, রাশিয়া তথ্য দিয়েছে। সেজন্যই তড়িঘড়ি ভারতীয়দের খারকিভ ছাড়ার ‘আদেশ’ দেওয়া হয়েছে। তবে রাশিয়া কী তথ্য দিয়েছে, তা খোলসা করেননি তিনি।