আদানি-হিন্ডেনবার্গ কাণ্ডে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট পেশ করল সেবি। ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সুরক্ষা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করলে বাজারে যাতে অত্যধিক নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেজন্য দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে। সেইসঙ্গে যাবতীয় বিষয় মীমাংসার জন্য একটি শক্তিশালী নীতি প্রণয়নের সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। ওই কমিটি জানিয়েছে, যে সংস্থা নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, তাদেরই যাতে যাবতীয় আর্থিক বোঝা বইতে হয়, তা ওই নিয়মে নিশ্চিত করতে হবে। যে রিপোর্টের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে যাতে ‘উপযুক্ত নির্দেশ’ দেয়, সেই আর্জি জানিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)। আগামিকাল (মঙ্গলবার) সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা আছে শীর্ষ আদালতে।
আরও পড়ুন: Adani weath erosion- হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে জেরে একদিনে ১৭০৮৩৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল গৌতম আদানির
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ৪১ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছে সেবি। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে 'অফশোর ফান্ড' (মিউচ্যুয়াল ফান্ড স্কিম, যা বিদেশে বা আন্তর্জাতিক বাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে) নিয়ে তথ্য প্রদানের নিয়মে যে পরিবর্তন করেছিল সেবি, সেই পরিবর্তিত নিয়মের হয়েই সওয়াল করা হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে যে ওই নিয়মের ফলে বিদেশ বা আন্তর্জাতিক বাজারে বিনিয়োগ করা মিউচুয়াল ফান্ড চিহ্নিত করতে কোনও সমস্যা হয় না। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত কমিটি জানিয়েছিল, ২০১৯ সালের সংশোধিত নিয়মের কারণে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থায় যে 'অফশোর' ফান্ডধারীরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়ছে সেবি।
আরও পড়ুন: 'আমাদের ইচ্ছা করে বদনাম করেছিল,' হিন্ডেনবার্গ অভিযোগের ৫ মাস পর ফের সোচ্চার গৌতম আদানি
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি রিপোর্টে শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলে হিন্ডেনবার্গ। তারপরই শেয়ার বাজারে হুড়মুড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল আদানি গ্রুপের বিভিন্ন শেয়ার। রাতারাতি কোটি-কোটি টাকা খুইয়ে ফেলেছিলেন আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। যিনি নিজেই জানিয়েছেন যে ওই রিপোর্ট পেশের পর ২৭ জানুয়ারি ১৭০৮৩৯ কোটি খুইয়েছিলেন।
শেয়ার বাজারের রক্তক্ষরণের জেরে আদানিকাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি তোলেন বিরোধীরা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানান তাঁরা। এমনকী দিনকয়েক আগে ‘মোদানির মেগাস্ক্যাম’ বলেও অভিহিত করেছে কংগ্রেস। যদিও প্রথম থেকে যাবতীয় অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন আদানি। জুনেও আদানি দাবি করেছেন, ‘আমাদের ইচ্ছা করে বদনাম করেছিল।’