সামনেই রয়েছে বিধানসভা ভোট। ভোট ঘিরে পারদ চড়েছে স্বপ্নসুন্দর পার্বত্যরাজ্য উত্তরাখণ্ডে। তবে ভোট ঘিরে গরমাগরম আলোচনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ঘটে যাওয়া পর পর ভূমিকম্পের আতঙ্ক। গত এক মাসে উত্তরাখণ্ডে পর পর ৬ টি ভূমিকম্প হয়েছে। শেষ ভূমিকম্পটি হয়েছে শনিবার। যার জেরে কেঁপে উঠেছে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী এলাকা।
শনিবার উত্তরকাশীতে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ছিল, ৩.৬ । ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেসিমোলজি এমনই তথ্য জানিয়েছে। ভূত্বক থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ওই কম্পনের মূল কেন্দ্রস্থল। এই খবর নিঃসন্দেহে এলাকাবাসীর ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনা। এর আগে ২৭ জানুয়ারি, ভূমিকম্পের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ছিল ২.৭। সেই ঘটনা ঘটে যায়, উত্তরাখণ্ডের আলমোরাতে। জানুয়ারির ২৫ তারিখে কেঁপে ওঠে উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়। সেখানে কম্পনের তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৪.৩ । একই মাসে ১৮ তারিখে উত্তরাখণ্ড আরও একবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। সেদিন উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরে অনুভূত হয় তীব্র ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ২.৫। এর ঠিক একদিন আগে, ১৭ জানুয়ারিও পিথোরাগড়ে আরও একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ২.৮। ১৬ জানুয়ারি চামোলিতে আরও একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, যার তীব্রতা ছিল ৩.৮।
আতঙ্কের বিষয়, শুধুমাত্র চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই এই ঘটনা ঘটেছে তা নয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি জুড়েও একই ছবি দেখা গিয়েছিল। ভোর সাড়ে ছ'টার সেই কম্পনে হতাহতের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০২১ জানুয়ারিতে উত্তরাখন্ডের বাগেশ্বর কেঁপে উঠেছিল ভূমিকম্পে। প্রশ্ন উঠতে থাকে, হিমালয়ের কোলে থাকা এই রাজ্যে এমনভাবে পর পর ভূমিকম্পের ঘটনা কি কোনও অশনি সংকেত বয়ে আনছে? এদিকে দেশের বিভিন্ন ভূমিকম্পের ঘটনায় ২৪x৭ নজর রাখছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেসিমোলজি। দেখা যাচ্ছে, হিমালয়ের দুর্বল এলাকা বারবার ভূমিকম্পের জেরে আলোড়িত হচ্ছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্যভাবে উঠে আসে ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে হরিদ্বারের ঘটনা। ডিসেম্বরের ১ তারিখ সেবার ৪০ বছর পর ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেবভূমি হরিদ্বার। ২০২১ অগাস্টে ৩.৮ কম্পমের তীব্রতা নিয়ে কেঁপে ওঠে দেরাদুন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমালয়ের সামনের অংশে চাপ নির্গমনের জেরেই এই ভূমিকম্পগুলি হয়ে যাচ্ছে। আর এই সামনের অংশেই অবস্থিত উত্তরাখণ্ড। উল্লেখ্য, প্রতিবছরই হিমালয় ৫ মিলিমিটার করে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। পাত সংস্থানের ফলেই চলছে এই বৃদ্ধি। নেপথ্যে রয়েছে টিবেটিয়ান প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেট। যার জেরে ভূকম্পনের কার্যকলাপ চলছে উত্তরাখণ্ড জুড়ে। তবে আগামী দিনে এর ফলাফল কোনদিকে গড়াবে? বা পর পর ভূমিকম্প ঘিরে কোন অশনি সংকেত রয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগে এলাকাবাসী।