সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও কল্যাণ মন্ত্রকের মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। জবাব দিচ্ছিলেন আরজেডি সাংসদ মনোজ কুমার ঝায়ের প্রশ্নের। প্রসঙ্গ ছিল, মহিলাদের ঋতুস্রাবকালীন স্বাস্থ্য নীতি নিয়ে। বক্তব্য পেশের সময় স্মৃতি ইরানি বলেন, মহিলাদের ঋতুস্রাবকালীন সবেতন ছুটির কোনও প্রয়োজন নেই, কারণ তা ‘প্রতিবন্ধক’ নয়।
সংসদে আরজেডি সাংসদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘ একজন ঋতুস্রাব মহিলা হিসেবে, ঋতুস্রাব এবং ঋতুচক্র কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়, এটি মহিলার জীবনযাত্রার একটি স্বাভাবিক অংশ।’ একই সঙ্গে স্মৃতি বলেন,'আমাদের এমন বিষয়গুলি প্রস্তাব করা উচিত নয় যেখানে মহিলাদের সমানাধিকারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয় শুধুমাত্র এই কারণে যে, ঋতুস্রাব হয় না এমন একজনের ঋতুস্রাবকালের প্রতি একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।' এর আগে, গত সপ্তাহেই কংগ্রেসের সাংসদ শশী থারুর ঋতুস্রাবকালীন মহিলাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতি নিয়ে সরকারের মনোভাব জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। সেদিনও স্মৃতি ইরানি জানিয়েছিলেন যে, ঋতুস্রাবকালে মহিলাদের সবেতন ছুটি সব কর্মস্থলে বাধ্যতামূলক করা নিয়ে আপাতত কোনও প্রস্তাব ঘিরে বিবেচনা করা হয়নি। এদিকে, বুধবার সংসদের উচ্চকক্ষে একটি প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে স্মৃতি ইরানি জানান, ‘যাঁরা ডিসমেনোরিয়ায় ভুগছেন বা তার সমকক্ষ কোনও রোগে ভুগছেন, তাঁদের সমস্যা ওষুধে সেরে যায়।’ তাঁর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘ যাইহোক, ঋতুস্রাবের সমস্যা এবং এর সাথে সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপগুলি নীরবতা দ্বারা বেষ্টিত, প্রায়শই লজ্জার সাথে তা পেশ করা হয়।’ তিনি বলেন, এটির সঙ্গে বেশ কিছু সামাজিক নিষেধাজ্ঞা জড়িয়ে রয়েছে। যার ফলে, স্বাধীনভাবে ওই মহিলার ঘোরাফেরাও রুদ্ধ হয়। স্মৃতি বলছেন, এর ফলে ‘বহু ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে তাঁরা বাদ পড়েন ও হেনস্থার শিকারও হন’।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘এটি আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, যখন একজন ঋতুমতী মেয়ে প্রথমবার তার মাসিক চক্রের মুখোমুখি হওয়ার সময় মানসিক এবং শারীরিকভাবে যে পরিবর্তনগুলি সহ্য করতে হয়, তার সম্পর্কে অজানা থাকে।’ র আগে ঋতুস্রাব নীতি নিয়ে একটি খসড়া পেশ করেছিল সরকার। সেখানে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের ঋতুস্রাবকালীন ছুটির বিষয়ে কার্যত সায় ছিল কেন্দ্রের। তারপরই আসে স্মৃতির বুধবারের বার্তা। এদিকে সংসদের আলোচনায় উঠে আসে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ইতিবাচক দিকের কথা। ন্যাপকিনে কোন উপাদান দেওয়া হচ্ছে, বা তা নিয়ে সরকারি নজরদারি কতটা কড়া তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আরজেডি সাংসদ। এর জবাবে স্মৃতি বলেন,' ২০১৪ সালে মোদী সরকারের পরে, জলশক্তি মন্ত্রক স্যানিটারি পণ্য পরিচালনার জন্য জাতীয় এবং রাজ্য প্রোটোকল শুরু করে।'