আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী এবছর মৌসুমী বৃষ্টিপাতের বণ্টন প্রচন্ড অসম। উত্তর এবং মধ্য ভারতের কিছু অংশে এবছর বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি আবার উত্তর-পূর্ব ভারতে এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ কম। মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম এবং অসম প্রভৃতি রাজ্যে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে অনেক কম। ফলাফল স্বরূপ ভারতের বাজারে কৃষি পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যবসায়ী ও শিল্প কর্মকর্তাদের সংস্থা রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, ভারতে চিনির দাম এক লাফে প্রায় ৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিগত ছয় বছরের মধ্যে সর্বাধিক। দেশে সীমিত ও অসম বৃষ্টিপাত এই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও শিল্প কর্মকর্তারা।
এর ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং কেন্দ্রীয় সরকার চিনি রপ্তানির উপর স্থগিতাদেশ দিতে পারে। বোম্বে সুগার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক জৈন বলেন যে, বৃষ্টিপাতের অভাবের কারণে চিনিকলগুলো উৎপাদন কম হচ্ছে এবং নিজেদের লভ্যাংশ সঠিক থাকার জন্য চিনির দাম আরও বৃদ্ধি পাবে।
চিনি ডিলারদের মতে, চিনির দাম বৃদ্ধি পেলে বলরামপুর চিনি, দ্বারিকেশ সুগার, শ্রী রেণুকা সুগারস, এবং ডালমিয়া ভারত চিনির মতো সংস্থাগুলি কৃষকদের সঠিক দাম এবং সময় মতো টাকা দিতে পারবে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন যে, ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবর্ষে চিনির উৎপাদন প্রায় ৩.৩ শতাংশ কমে ৩১.৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন হতে পারে। কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে কম বৃষ্টিপাতের জন্য মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকে আখের ফলন ব্যাহত হয়েছে। এই দুই রাজ্যে উৎপাদিত চিনির পরিমাণ মোট ভারতীয় উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি।
উৎপাদনের ঘাটতির জন্য এই মঙ্গলবার প্রতি মেট্রিক টন চিনিতে ৩৭,৭৬০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে চিনির দাম এই প্রথম এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও ভারতীয় বাজারে চিনির দাম বিশ্বব্যাপী সাদা চিনির দামের থেকে প্রায় ৩৮ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরে ভারত সরকার দেশের চাহিদা মেটার পর প্রায় ৬.১ মিলিয়ন মেট্রিক টন চিনি রপ্তানির অনুমতি দেয়। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এবছর চিনি রফতানি উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে কমবে, যা দেশের জিডিপির উপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া বিগত দিন গুলিতে চিনির দাম আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ী মহল।