কমেও কমল না। আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাস (Coronavirus)। আর তার পিছনে বিয়েবাড়ির মতো অনুষ্ঠানকেই দায়ী করছে কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞদের প্যানেল।
বিয়েবাড়িতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই করোনা সতর্কতা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ । দূরত্ববিধি তো দূর, সামান্য মাস্কও পরেন না অতিথিরা। আর তার ফলেই এই ধরনের অনুষ্ঠান থেকে হু হু করে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। কেন্দ্রের প্রাথমিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
'সুপার স্প্রেডার অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যেটা দেখা যাচ্ছে যে, বেশিরভাগ ব্যক্তিই অসচেতন। আমাদের বুঝতে হবে যে, সমাজের একটা বড় অংশে করোনা হলে ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। বিশেষ করে গ্রামে। এত দূর এসে এভাবে হাল ছেড়ে দেওয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না,' এমনটাই জানালেন নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ডঃ ভি কে পাল। ডঃ পালের কথায়, 'আরও বেশ কিছু দিন এই ধরনের সুপারস্প্রেডার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা উচিত আমজনতার। নয়তো পরিস্থিতি আবার জটিল হতে পারে।'
ঠিক কীভাবে বিয়েবাড়ি থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে? এর উত্তরে একটি উদাহরণ তুলে ধরলেন পঞ্জাবের নোডাল আধিকারিক ডঃ রাজেশ ভাস্কর। তিনি বলেন, 'অমৃতসরের একটি পরিবারের দিল্লিতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেই একটা বিয়েবাড়ি থেকেই ৩৮ জন অসুস্থ হন। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।'
শুধু বিয়েবাড়িই নয়, শেষকৃত্য-শ্রাদ্ধের মতো অনুষ্ঠানেও বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক অতিথি যোগ দেন। সেখানেও থাকে না সচেতনতার বালাই। মোহালির একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মোট আটজন করোনায় আক্রান্ত হন। ফলে যে কোনও বড় অনুষ্ঠানেই যে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল, তা বলাই বাহুল্য।
গত বছরের শেষে প্রায় তলানিতে এসে গিয়েছিল সংক্রমণের হার। কিন্তু ২০২১ শুরু হতে না হতেই আবারও লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। পরিস্থিতি এমনই যে আবারও লকডাউনের পথে হাঁটছে বেশ কিছু জেলা প্রশাসন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে শুক্রবার আবারও লকডাউনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ৪০,০০০ নতুন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। চলতি বছরে এটা রেকর্ড। কারণ ২০২০ সালের নভেম্বরের পর থেকে একদিনে এত বেশি সংক্রমণ হয়নি। ফলে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কপালে ভাঁজ মোদী সরকারের। অথচ মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই ফেব্রুয়ারি মাসে গড়ে ১১,০০০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। অর্থাৎ দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল অনেকটাই স্তিমিত।
চিকিৎসকদের মতে, এই সময়টা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন যত কম হয়, ততই মঙ্গল। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও যাতে অতিথিরা মাস্ক, স্যানিটাইজার, দূরত্ববিধি মানেন, সেদিকে রাখতে হবে কড়া নজর।