কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় কেউ মারা গেলে সেই কর্মীর সন্তানকে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়। তবে এই ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট এবার এক বড় নির্দেশ দিল। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, সরকারি সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় কোনও মহিলা কর্মী মারা গেলে তাঁর বিবাহিত মেয়ে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির দাবি জানাতে পারেন না। বিচারপতি এমআর শাহ এবং কৃষ্ণ মুরারির ডিভিশন বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ করেন।
প্রসঙ্গত, একজন মহিলা মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর পদে চাকরি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করা হয়। জানা গিয়েছে, আবেদনকারী মহিলার বাবা সরকারি সংস্থায় ক্লার্কের পদে কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর আবেদনকারীর মা নিজের স্বামীর পদে চাকরি পান। কর্মরত অবস্থায় আবেদনকারীর মাও মারা যান ২০১১ সালে। এই আবহে সহানুভূতির ভিত্তিতে নিজের মায়ের স্থানে চাকরির আবেদন জানান। তবে সেই আবেদনকারী বিবাহিত বলে তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এদিকে আদালতও জানিয়ে দিল, ‘আবেদনকারী একজন বিবাহিত মহিলা। তিনি এটা দাবি করতে পারেন না যে আর্থিক ভাবে তিনি তাঁর মায়ের উপর নির্ভরশীল ছিলেন।’
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে, সহানুভূতির ভিত্তিতে মৃত কর্মীর সন্তান বা স্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়া একটি ‘ব্যাতিক্রম’। এটি কখনও মৌলিক অধিকার নয়। যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তাঁর ওপরে নির্ভরশীল কেউ যাতে অনাহারে না থাকেন বা কর্মীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার হঠাৎ করে সংকটে না পড়ে, তা বিবেচনা করে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়। সহানুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগের আবেদনের প্রেক্ষিতে অপর এক মামলাতেও সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বিবাহিত মহিলা বাবার মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর পর চাকরির জন্য আবেদন জানাতে পারেন না। এই ক্ষেত্রে, কেরল ভিত্তিক ফার্টিলাইজারস অ্যান্ড কেমিক্যালস ট্র্যাভাঙ্কোর লিমিটেডের কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। তবে তার ১৪ বছর পর তাঁর মেয়ে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির দাবি জানান। দীর্ঘদিন পর ২০২১ সালে কেরল হাই কোর্ট আবেদনকারীর পক্ষে রায় দেয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলায় ফার্টিলাইজারস অ্যান্ড কেমিক্যালস ট্র্যাভাঙ্কোর লিমিটেডের পক্ষে রায় দিয়ে হাই কোর্টের নিয়োগের নির্দেশ খারিজ করে দেয়।