মৃত্যুদণ্ড কেবলমাত্র সেই সব দোষীকেই দেওয়া হোক, যাদের সংশোধনের কোনও সম্ভাবনাই নেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এমনই পর্যবেক্ষণ করল। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সুন্দররাজন নামক এক ব্যক্তিকে দেওয়া প্রাণদণ্ডের আদেশ মুকুব করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এই মামলায় আরও পর্যবেক্ষণ করে, প্রয়োজনে কেন্দ্রের উচিত কম বেদনাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ কোনও উপায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা। (আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতার ধরনায় যোগ দিতে রাজি ডিএ আন্দোলনকারীরা! তবে রয়েছে শর্ত)
উল্লেখ্য, এই মামলায় দোষী সুন্দররাজন এক সাত বছর বয়সি শিশুকে অপহরণ করে খুন করেছিল। সেই মামলায় ২০০৯ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে শীর্ষ আদালতে ফাঁসির আদেশ মুকুবের আর্জি জানিয়ে মামলায় করেছিল দোষী। তবে ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছিল উচ্চ আদালত। পাশাপাশি জেলে সুন্দররাজনের আচরণ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিল আদালত। এই মর্মে কাম্মাপুরম থানার উদ্দেশে নোটিশ জারি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনকারীদের 'নৈতিক জয়' আদালতে, বড় নির্দেশ হাই কোর্টের
এদিকে ২০১৮ সালের মহম্মদ আরিফ বনাম সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের মামলার রায়দানের পর সুন্দররাজনের ফাঁসি খারিজের মামলা ফের চালু হয় শীর্ষ আদালতে। উল্লেখ্য, মহম্মদ আরিফ বনাম সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের মামলায় শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, সকল রিভিউ পিটিশনই 'ওপেন কোর্টে' শোনা হবে। এই আবহে ২০১৮ সালে নতুন করে সুন্দররাজেনের রিভিউ পিটিশন শোনে শীর্ষ আদালত। সেই মামলার শুনানি শেষে শীর্ষ আদালত দেখে যে ২০০৯ সালের ঘটনার আগে দোষীর কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড নেই। সেই দোষী ফুড ক্যাটারিংয়ে ডিপ্লোমা প্রাপ্ত শিক্ষিত। এদিকে সে হাইপারটেনশনের রোগী। এই আবহে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই দোষীর সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। শীর্ষ আদালত জানায়, এর আগে কোনও আদালতেই এই দোষীর সংশোধনের সুযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়নি।
এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রকে। মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প পথ খোঁজার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটিতে দিল্লি, বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদের মতো অন্তত দু’টি জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বৈজ্ঞানিক, মনোবিদ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।