বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > SC on Manipur Video: 'সাংবিধান লঙ্ঘনের মারাত্মক নিদর্শন', মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন ঘোরানো নিয়ে কড়া বার্তা CJI চন্দ্রচূড়ের

SC on Manipur Video: 'সাংবিধান লঙ্ঘনের মারাত্মক নিদর্শন', মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন ঘোরানো নিয়ে কড়া বার্তা CJI চন্দ্রচূড়ের

মণিপুরের ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির (AP)

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে নারীদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা সাংবিধান লঙ্ঘনের সবচেয়ে মারাত্মক নিদর্শন।’ এদিকে ঘটনা নিয়ে সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার ফের এই বিষয়ে শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।

গতকাল মণিপুরের এক বিভীষিকাময় ঘটনা সামনে এসেছে। তাতে দেখা যায়, দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো হচ্ছে। অভিযোগ, ৪ মে ঘটনাটি ঘটেছিল। তিনজন কুকি মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এটা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে নারীদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা সাংবিধান লঙ্ঘনের সবচেয়ে মারাত্মক নিদর্শন।' তিনি আরও বলেছেন, 'যে ভিডিয়োগুলি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে আমরা গভীরভাবে আহত এবং হতবাক। সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরাই পদক্ষেপ করব।' এদিকে ঘটনা নিয়ে সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার ফের এই বিষয়ে শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে। 

এদিকে এই ঘটনার ৭৭ দিন পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ভাইরাল ভিডিয়োর ঘটনাটি ঘটে ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৫ কিমি দূরে কাংপোকপি জেলায়। পুলিশের এফআইআর অনুযায়ী, সেই ঘটনায় নির্যাতিতা মহিলাদের পরিবারের দুই সদস্যকেও খুন করা হয়েছিল। এফআইআরে বলা হয়েছে, ৪ মে এক কুকি পরিবারের ৫ সদস্য আতঙ্কে বনে লুকিয়ে পড়েছিলেন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু পুলিশের হাত থেকে তাদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ৫৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে খুন করা হয়। তারপর তিনজন নারীকে নগ্ন করিয়ে হাঁটানো হয়। ২১ বছর বয়সি এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পরে তিন মহিলা কোনওরকমে পালিয়ে যান। ২১ জুন অভিযোগ দায়ের করা হয় পুলিশে।

উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। রেহাই পাচ্ছে না মহিলা ও শিশুরাও। প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৫০ জন।

বন্ধ করুন