গুজরাট দাঙ্গায় মিথ্যে প্রমাণ সাজানোর অভিযোগে অভিযুক্ত সমাজকরমী তিস্তা শীতলাবাদকে স্বস্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। তিস্তাকে রক্ষাকবচ প্রদান করে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, আগামী এক সপ্তাহ তিস্তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। এর আগে গুজরাট হাই কোর্ট অবশ্য অবিলম্বে তিস্তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিস্তা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আপাতত স্বস্তি দেওয়া হল তিস্তাকে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, তিস্তার আত্মসমর্পণের এত তাড়াহুড়ো কেন? বিচার বিভাগীয় হেফাজত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্ত রয়েছেন তিস্তা। সুপ্রিম বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, 'গুজরাট হাই কোর্ট যা করছে, তাতে আমরা অবাক।' এর আগে সুপ্রিম কোর্টই তিস্তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছিল। এরপর সম্প্রতি তিস্তা গুজরাট হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে স্বাভাবিক জামিনের আবেদন করেন। তবে শনিবার সেই আবদেন খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। উলটে তিস্তাকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে বলে আদালত। এরপরই গুজরাট হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিস্তা।
উল্লেখ্য, গুজরাট সরকার গঠিত বিশেষ তদন্ত দল অভিযোগ করে, ২০০২ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকারকে অস্থিতিশীল করতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার থেকে টাকা নিয়েছিলেন তিস্তা শীতলাবাদ। এসআইটি-র দাবি, গোধরায় ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার পরেই সমাজকর্মী তিস্তা শীতলাবাদ রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করেন। উল্লেখ্য, সেই সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এসআইটি দাবি করেছে যে গোধরা কাণ্ডের কয়েকদিন পরই কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তিস্তা। সেই সময় তিনি ৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতার থেকে। এই বৈঠকের দুই দিন পরই দু’জনে আবারও মিলিত হন। এবার বৈঠকটি হয় শাহিবাগের সরকারি সার্কিট হাউজে। সেখানেই আরও ২৫ লাখ টাকা তিস্তাকে দেন আহমেদ প্যাটেল।
বিশেষ তদন্তকারী দলের অভিযোগ, তৎকালীন গুজরাট সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং মিথ্যা প্রমাণ পেশ করতেই কংগ্রেস নেতার থেকে টাকা নিয়েছিলেন তিস্তা। এই মিথ্যা প্রমাণ মামলায় গতবছর জুন মাসে তিস্তা এবং প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আরবি শ্রীকুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৮, ১৯৪ ও ২১৮ ধারায় মামলা দায়ের হয় তিস্তার বিরুদ্ধে। এসআইটি-র তরফে বলা হয়, ‘দুই সাক্ষীর জবানবন্দি প্রমাণ করে যে তিস্তা অন্যান্য অনেকের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। আহমেদ প্যাটেলের নির্দেশে এই ষড়যন্ত্র হয়েছিল।’