নতুন ইমাম পেল দিল্লির ঐতিহ্যবাহী জামা মসজিদ। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আমলে নির্মাণ হওয়া এই মসজিদের পরবর্তী ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হলেন শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারির ছেলে তথা সেখানকার নায়েব ইমাম সৈয়দ উসামা শাবান বুখারি। নিয়ম অনুযায়ী, বংশপরম্পরায় একজন শাহি ইমাম তাঁর জীবিত অবস্থায় উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। সেই ঐতিহ্য মেনেই শবে বরাতের সন্ধ্যায় দস্তরবন্দী (পাগড়ি বাঁধা) অনুষ্ঠানে পুত্র সৈয়দ উসামা শাবান বুখারিকে উত্তরসূরি ঘোষণা করেন বর্তমান শাহি ইমাম। সৈয়দ উসামা শাবান বুখারী হলেন মসজিদের চতুর্দশ শাহি ইমাম।
আরও পড়ুন: জামা মসজিদের নিচে কৃষ্ণমূর্তি? ASI-কে নোটিশ আইনজীবীর
রবিবার শবে বরাতের সন্ধ্যায় এশার নামাজের পর দস্তরবন্দী বা পাগড়ি বাঁধার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তি, ইমাম, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আহমেদ বুখারি জানান, দিল্লির জামা মসজিদের একটি প্রথা ও ঐতিহ্য হল যে - ইমাম তাঁর জীবদ্দশায় তার ছেলেকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন। দস্তরবন্দী অনুষ্ঠানে তাঁর মাথায় পাগড়ি বেঁধে উত্তরাধিকারের আনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। তাই বহু পুরনো প্রথা অনুযায়ী তিনি তাঁর পুত্র সৈয়দ উসামা শাবান বুখারিকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে শবে বরাত নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ বার্তা দেন শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি। তিনি বলেন, ‘এটি নামাজের রাত। এটি গুনাহ মাফের রাত। সকলের উচিত নীরবে প্রার্থনা করা। তার পরে প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়া।’ উল্লেখ্য, উসামা শাবান অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে স্নাতক হয়েছেন। ইসলামি ধর্মতত্ত্বে একজন আলিম ও ফাজিল। তিনি দিল্লির মাদ্রাসা জামিয়া আরাবিয়া শামসুল উলূম থেকে ইসলামের অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১৪ সালে তিনি নায়েব ইমাম নিযুক্ত হন। প্রসঙ্গত, সৈয়দ আবদুল গফুর শাহ বুখারি ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের দ্বারা নিযুক্ত জামা মসজিদের প্রথম শাহি ইমাম। বলা হয় যে সম্রাট নির্দেশ দিয়েছিলেন যে একই পরিবার থেকে বংশ পরম্পরায় ইমাম নিযুক্ত অব্যাহত থাকবে।
তবে উসামা শাবানকে উত্তরসূরি ঘোষণা করা হলেও আপাতত শাহি ইমামের দায়িত্ব পালন করবেন আহমেদ বুখারি। তিনি জানান, দস্তরবন্দী অনুষ্ঠানের পরেও তিনি যথারীতি জামা মসজিদ দিল্লির ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে যান বা শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যান অথবা যদি তাঁর মৃত্যু হয় সেক্ষেত্রে উসামা শাবান ইমামের দায়িত্ব পালন করবেন।