মোটরবাইক চালানোর সময়ে সতর্ক থাকা উচিত্। সেটার নিজের স্বার্থেও আবার রাস্তার অন্যদের জন্যও বটে। সামান্য হেলমেট পরার মতো নিয়মটুকু মানাই যায়। তাছাড়া আলো বা হর্ন ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, নথি ঠিক আছে কিনা, সিগন্যাল দেখে চালানোও প্রয়োজন।
ফলে এগুলি না মানলে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী চালান কাটতেই পারেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে একজন ট্র্যাফিক কনস্টেবল আপনার মোটরসাইকেলের চাবি খুলে নিয়ে নেবেন। সেটা কিন্তু একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ। আর এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়েছে।
আরও পড়ুন: New Traffic Rules: গাড়ি বা বাইকের হর্ন বাজালে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে, সাবধান!
ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী আপনাকে সতর্ক করতে পারেন বা আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে পারেন। কিন্তু মোটরসাইকেলের চাবি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা তাঁর নেই। যদিও এটা অনেকেই জানেন না। ফলে তাঁরা ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী দেখেই ভয় পেয়ে যান। ফলে নিজের আইনি অধিকার সম্পর্কে সকলের সচেতন হওয়া উচিত।
গাড়ির চাবি নেওয়ার অধিকার ট্র্যাফিক কনস্টেবলের নেই
ইন্ডিয়ান মোটর ভেহিকেল অ্যাক্ট ১৯৩১-এর অধীনে, শুধুমাত্র একজন ASI লেভেল অফিসার ট্র্যাফিক লঙ্ঘনের জন্য আপনার চালান কাটতে পারেন। এএসআই, এসআই, ইনস্পেক্টরের স্পটে থাকতে হবে। ট্র্যাফিক কনস্টেবলরা শুধুমাত্র তাঁদের সাহায্য করবেন।
ফলে কারও গাড়ির চাবি নেওয়ার অধিকার তাদের নেই। শুধু তাই নয়, তাঁরা আপনার মোটরসাইকেলের টায়ারের হাওয়াও বের করতে পারবেন না। এমনকি তাঁরা আপনার সঙ্গে ভুলভাবে কথা বলতে বা খারাপ ব্যবহার করতেও পারেন না। কোনও ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী কোনও কারণ ছাড়াই আপনাকে হয়রানি করলে আপনি তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন
- চালান কাটার জন্য ট্র্যাফিক পুলিশের একটি চালান বই বা একটি ই-চালান মেশিন থাকা আবশ্যিক। যদি এর দুটির কোনওটিই তাঁদের কাছে না থাকে, তবে চালান কাটা যাবে না।
- ট্র্যাফিক পুলিশের ইউনিফর্ম থাকাও জরুরি। ইউনিফর্মের ফিতে নম্বর এবং নাম থাকা উচিত। ইউনিফর্ম না থাকলে পুলিশ কর্মীকে তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বলা যেতে পারে।
- ট্র্যাফিক পুলিশের হেড কনস্টেবল আপনাকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা জরিমানা করতে পারেন। এর চেয়ে বেশি জরিমানা শুধুমাত্র এএসআই বা এসআই পদমর্যাদার ট্র্যাফিক অফিসার করতে পারেন। অর্থাৎ তাঁরা ১০০ টাকার বেশি চালান করতে পারেন।
- যদি ট্র্যাফিক কনস্টেবল আপনার মোটরবাইকের চাবি নিয়ে নেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ঘটনার ভিডিয়ো করুন। এরপর ওই এলাকার থানায় গিয়ে কোনও ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে সেটা দেখিয়ে অভিযোগ করতে পারেন।
- মোটরবাইক বা গাড়ি চালানোর সময় ড্রাইভিং লাইসেন্সের আসল কপি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ শংসাপত্র অবশ্যই থাকতে হবে। সেই সঙ্গে গাড়ির নিবন্ধন ও বিমার ফটোকপিও লাগবে পারে। সুবিধার জন্য ডিজিলকার এবং এমপরিবহণ অ্যাপ ব্যবহার করুন।
- সঙ্গে টাকা না থাকলে পরেও জরিমানা দিতে পারেন। এমতাবস্থায় আদালত একটি চালান জারি করে। ফলে আদালতে গিয়ে চালান পূরণ করতে হবে। এই সময়ে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স তাঁর কাছে রাখতে পারেন।
আইনজীবী গুলশন বাগোরিয়া বলেন, মোটরযান আইন ১৯৮৮-তে পুলিশ কর্মচারীকে যানবাহন তল্লাশির সময় গাড়ির চাবি সরানোর অধিকার দেওয়া হয়নি।