পূর্বাভাস মতোই জাপানের উপকূলে আছড়ে পড়ল শক্তিশালী ঝড় ‘টাইফুন ল্যান’। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরে টোকিয়ো থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিমে ওয়াকায়ামার দক্ষিণ প্রান্তে ল্যান্ডফল করেছে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আসা টাইফুন। শক্তিশালী এই ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয়েছে অতি ভারী বৃষ্টি। এর জেরে মধ্য ও পশ্চিম জাপানের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বাতিল করা হয়েছে ৮০০–র বেশি উড়ান। এছাড়াও, বহু মানুষকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমুদ্রে আছড়ে পড়তে চলেছে দানবীয় 'টাইফুন নানমাডোল'! অশনি সংকেত আসতেই কী জানাল জাপান?
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে জাপানে আছড়ে পড়েছে টাইফুন। এত গতিতে ঝড় আছড়ে পড়ার ফলে স্বাভাবিকভাবে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালানোর আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে বন্যা এবং ভূমিধসের সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এই ঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে দেশের অগ্নিনির্বাপণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানে এই বিধ্বংসী ঝড়ের কারণে ৮০০টি উড়ান বাতিল করার পাশাপাশি কয়েক ডজন ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি রুখতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক রাস্তা।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই জাপানে আঘাত হেনেছিল ‘টাইফুন খানুন’। তবে ছুটির সময় এই ঝড়ের কারণে অনেক কারখানা বন্ধ ছিল। কর্মীদের অনেকেই নিজ-নিজ এলাকায় ফিরে গিয়েছিলেন। টাইফুন ল্যানে ঝড়ের পাশাপাশি ব্যাপক বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় টোকাই অঞ্চলে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে, যা অগস্ট মাসের গড় বৃষ্টিপাতের তিনগুণ বেশি। ইতিমধ্যেই এই ঝড়ের কারণে বহু বাড়িঘর এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন ফুটেছে দেখা গিয়েছে, কীভাবে ঝড়ের কবলে মানুষজন ছিটকে পড়ছে। জাপানের মধ্য এবং পশ্চিমাঞ্চলে এই ঝড়ের ফলে এখনও পর্যন্ত বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। প্রায় ৯০ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া, নিরাপত্তার কারণে সেভেন ইলেভেনের ২১০ টি আউটলেট বন্ধ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, টাইফুন ল্যানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল)। হোনশু দ্বীপের পশ্চিম অংশজুড়ে প্রায় ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার (৯ মাইল) বেগে উত্তর-পশ্চিমে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এই ঝড়। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানাচ্ছে, বুধবার ভোরের মধ্যে জাপান সাগরে পৌঁছানোর এবং উত্তর দিকে সরে যাবে এই ঝড়।