রবিবার উত্তরাখণ্ড ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়নের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। রাজ্য মন্ত্রিসভা ইউসিসি প্যানেলের খসড়া প্রতিবেদন অনুমোদন করার পরে, মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সভাপতিত্বে একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা দেশাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ইউসিসি কমিটি মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেওয়ার দু'দিন পরেই রবিবার এই ঘটনা হয়েছে।
২৬ জানুয়ারি রাজ্যের বিজেপি সরকার দু'দিনের বিশেষ বিধানসভা অধিবেশনের প্রাক্কালে এই কোডের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করার জন্য ঘোষণা করেছিল। দ্বিতীয় ও শেষ দিন মঙ্গলবার বিধানসভায় রিপোর্ট পেশ করা হবে। ৭০ সদস্যের সংসদে ক্ষমতাসীন দলের ৪৭টি আসন থাকায় ইউসিসি বিলটি নির্বিঘ্নে আনা হচ্ছে।
এরপর বিলটি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্যপালের অনুমোদন পেলেই তা আইনে পরিণত হবে।
২০২২ সালের উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির ইস্তেহারের অংশ ছিল ইউসিসি বাস্তবায়ন। গেরুয়া শিবির শেষ পর্যন্ত পুনর্নির্বাচনে জয়ী হয়।
সহজভাবে বলতে গেলে, এটি আইনগুলির একটি সাধারণ সেট যা বিশ্বাস এবং উপজাতি জুড়ে ধর্ম নির্বিশেষে একটাই আইন হবে এবং বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার এবং রক্ষণাবেক্ষণের মতো বিষয়গুলিকেও পরিচালনা করবে।
ভারতের সংবিধান অনুসারে, ইউসিসি রাষ্ট্রীয় নীতির অ-বিচারযোগ্য নির্দেশক নীতির একটি অংশ।
২০১১ সালের জাতীয় আদমশুমারি অনুসারে, পার্বত্য প্রদেশে ১৪% (১৩.৯%) মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে, এবং এই সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ তরাই অঞ্চলে বাস করে।
এদিকে বিজেপি পরিচালিত অসম সরকার এই ইউসিসি নিয়ে বেশ উৎসাহিত। অসমের মুখ্য়মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, আমরা উত্তরাখণ্ডের দিকে নজর রাখব। যদি ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় উত্তরাখণ্ড বিল পেশ করা হয়, তবে আমরা এটি পুরোপুরি কার্যকর করতে পারি কিনা তা আমরা দেখব। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের বিধানসভার অধিবেশন শুরু হবে, তাই আমাদের হাতে কিছুটা সময় আছে।
অসমের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকার অসমে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন প্রস্তুত করছে এবং রাজ্যের আইন বিভাগ এটি যাচাই করছে।
চলতি মাসের গোড়ায় হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকার ইউসিসি রূপায়ণ করলেও আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ইউসিসির আওতা থেকে দূরে রাখবে।
গত ১১ জানুয়ারি হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছিলেন, উত্তরাখণ্ড এবং গুজরাট ইউসিসিকে প্রথমে নিয়ে আসবে এবং অসম তাদের অনুসরণ করবে এবং অসম তাদের অনুসরণ করবে, যা অসম মডেল হবে।