প্রবল তোড়ে ধেয়ে আসছে জলের স্রোত। সামনে যা কিছু বাধা আসছে, সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ভেঙে তুষারধসের ঘটনায় এমনই তাণ্ডবের ভিডিয়ো সামনে এল। তা রীতিমতো দেখে শিউরে উঠছেন পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে আমজনতা।
রবিবার সকালে চামোলি জেলার জোশীমঠে নন্দাদেবী হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়ে। তার জেরে ধৌলিগঙ্গা প্রবল তোড়ে বইতে থাকে জল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় হৃষিগঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। নদীর দু'ধারে অবস্থিত অসংখ্য বাড়ি ভেসে যায়। দ্রুত আসরে নামে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ), ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভারতীয় সেনা।
তপোবন-রেনি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে উদ্ধৃত করে আইটিবিপির মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের সময় ১৫০ জনের বেশি শ্রমিক কাজ করছিলেন। যা জলের তোড়ে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নদী থেকে নয় থেকে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ সিং রাওয়াত জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারপিছু চার লাখ আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দু'লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হবে। যাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁরা ৫০,০০০ টাকা পাবেন।
তারইমধ্যে স্রোতের তোড়ে তপোবনের কাছে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একটি সুড়ঙ্গের মুখ। সেখানে আটকে পড়েছিলেন ১৬ জন শ্রমিক। তাঁদের সবাইকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। আরও কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় আরও মানুষকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনীর ডুবুরিদের দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনাও। পাঁচ টনের ভার নিয়ে বায়ুসেনার সি১৩০ সুপার হারকিউলিস বিমানে করে ৬০ জনের এনডিআরএফের একটি দল গাজিয়াবাদের হিন্দোন বিমানবন্দর থেকে দেরাদুনে পৌঁছে গিয়েছে। সেখান থেকে দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীদের নিয়ে যাওয়ার তৈরি আছে বায়ুসেনার এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। বাড়তি এনডিআরএফ দল নিয়ে হিন্দোন বিমানবন্দরে একটি সি১৩০ সুপার হারকিউলিস এবং দুটি এএন৩২ বিমান প্রস্তুত আছে। মোতায়েনের জন্য নয়াদিল্লি এবং মুম্বইয়ে মার্কোস দলকেও তৈরি রাখা হয়েছে।